নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের জন্য যে ব্যক্তিদের বাছাই করছেন, তাতে প্রচলিত নিয়ম থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন তিনি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং টিভিতে উপস্থাপনা, অভিনয়, প্রযোজনা বা পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিদের পেশাগত সক্ষমতা এবং পারদর্শিতাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের চিফ অব স্টাফ থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ,প্রতিরক্ষা বিভাগ ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর জন্য ট্রাম্প এমন ব্যক্তিদের বেছে নিচ্ছেন যারা তার প্রচারণায় পরিচিত মুখ। এই বাছাই প্রক্রিয়াটি হোয়াইট হাউজে তার প্রথম মেয়াদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রথম মেয়াদে রাজনীতিতে নবাগত রিপাবলিকান ট্রাম্প এমন ব্যক্তিদের দলে নিয়েছিলেন যাদের সাথে তার পূর্বের কোনও কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক বা আস্থার সম্পর্ক ছিল না।
কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্রদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে পুরস্কৃত করছেন। কিছু ব্যক্তির কাছে তাদের অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা প্রায় নেই বললেই চলে। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, কিছু নিয়োগের ক্ষেত্রে সেনেটের অনুমোদন পেতে কষ্টসাধ্য হতে পারে।
পেন্টাগনের তদারকি করতে ফক্স নিউজ ব্যক্তিত্ব পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিচালনার জন্য মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। অথচ পিট হেগসেথের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা একেবারে নেই বললেই চলে।
অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দীর্ঘদিনের রক্ষণশীল উস্কানিদাতা ম্যাট গেটজকে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। অথচ তার আইন সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। এছাড়া ট্রাম্প সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমকে দেশের শীর্ষ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করেছেন।
এছাড়া বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামীকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও তাদের কেউই পূর্বে কখনও সরকারি কোনও কাজে যুক্ত ছিলেন না।
ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড লুইস প্রেসিডেন্টিয়াল নিয়োগের ওপর একটি বই লিখেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তারা সাধারণত টিভিতে ভালো। সুতরাং তারা জনসম্মুখভাগে এসব কাজের ভালো উপস্থাপন করতে সক্ষম হবেন।’
লুইস আরও বলেন, ‘তবে যাদের তিনি বেছে নিয়েছেন,তাদের মধ্যে বড় বড় প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
হেগসেথ এবং গেটজের মতো ট্রাম্পের কিছু নির্বাচন ওয়াশিংটনের কিছু নেতার মধ্যেও সন্দেহ ও বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে।
এ ধরনের ব্যক্তির রাজনীতিতে প্রভাব রাখার সুযোগের বিষয়টি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকেরা।
সূত্র : রয়টার্স।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: