যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্বেষ বাড়ছে বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশীয়দের প্রতি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১০ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৩৪

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন দুনিয়ায় বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ক্রমেই বাড়ছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই বিদ্বেষ বাড়ার হার অনেক বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এশীয় দেশগুলো ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘স্টপ এএপিআই হেট’ এ তথ্য জানিয়েছে।

এক বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার স্টপ এএপিআই হেট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য রাজনীতিবিদদের উত্থান যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি এই সম্প্রদায়গুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের ঘৃণাও বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রাজনীতিতে অভিবাসী, বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল থেকে যাওয়া অভিবাসীদের সন্তানদের প্রাধান্য বেশ বাড়ছে। উদাহরণ হিসেবে, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কথাই ধরা যাক। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁর মতো রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হতে চাওয়া নিক্কি হ্যালি, বিবেক রামাস্বামীও ভারতীয় বংশোদ্ভূত। একইভাবে, রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জেডি ভ্যান্সের স্ত্রী উষা ভ্যান্সও ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

কমলা হ্যারিস আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্পকে মোকাবিলা করবেন। এমন এক সময়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন অনলাইন দুনিয়ায় দক্ষিণ এশীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

স্টপ এএপিআই হেট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসে ধারাবাহিকভাবে দক্ষিণ এশীয়দের বিরুদ্ধে অনলাইন বিদ্বেষ বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দূষিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্যতম, যেখানে কট্টর ডানপন্থীরা ধর্মান্ধ মতবাদ ও অপতথ্য ছড়িয়ে এই বিদ্বেষকে উসকে দিচ্ছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে উষা ভ্যান্স উপস্থিত হওয়ার পর এবং কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত করার পর এশীয় সম্প্রদায়ের প্রতি অনলাইন সহিংসতার হুমকি ২০২৪ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে দক্ষিণ এশীয়দের আধিপত্যের কারণেও এমনটা হয়েছে উল্লেখ করে স্টপ এএপিআই হেটের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে দক্ষিণ এশীয়দের রাজনৈতিক উপস্থিতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন চক্রে দক্ষিণ এশীয়দের বিরুদ্ধে অনলাইন বিদ্বেষ ক্রমেই বেড়েছে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এশীয় আমেরিকান সম্প্রদায়গুলোর দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়গুলোকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অনলাইন বিদ্বেষের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ বিদ্বেষমূলক বার্তা অনলাইনে ছড়ানো হয়েছে, তার ৬০ শতাংশের লক্ষ্যবস্তু ছিল দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়।

উগ্রপন্থী অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোতে দক্ষিণ এশীয়বিরোধী স্লোগান গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ হয়েছে; প্রায় ২৩ হাজার থেকে বেড়ে ৪৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে এবং আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি বিদ্বেষী বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৪ লাখ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর বংশোদ্ভূত লোকের বসবাস। এর মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা উল্লেখযোগ্য।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: