গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধের এক বছর পূর্তি ৭ অক্টোবর। এই যুদ্ধ বন্ধ চান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ। তাই ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে ফ্রান্সের প্যারিস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ইতালির রোমসহ নানা দেশে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভে কোথাও পুলিশ বাধা দিয়েছে, কোথাও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে আবার কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আল–জাজিরার খবর বলছে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। লন্ডনে ডাউনিং স্ট্রিট অভিমুখে পুলিশের কড়া পাহারায় কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। সে সময় পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিনের সমর্থক বিক্ষোভকারীদের, ইসরায়েলের সমর্থক বিক্ষোভকারীদের পাশ কাটিয়ে যেতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা প্রতিবন্ধকতা পার করে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, সেখান থেকে কমপক্ষে ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
জার্মানির সংবাদ সংস্থা ডিপিএ বলেছে, দেশটির হামবুর্গ শহরে ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা নিয়ে ৯৫০ জন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা দেখা গেছে। তাঁরা এ সময় ‘গণহত্যা বন্ধ করুন’ বলে স্লোগান দেন।
এদিকে প্যারিসের রিপাবলিক প্লাজায় ফিলিস্তিনি ও লেবাননের নাগরিকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। এ সময় অনেক ফিলিস্তিনির হাতে ‘স্টপ দ্য জেনোসাইড’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘হ্যান্ডস অফ লেবানন’ লেখা পোস্টার দেখা দেয়।
ইতালির রোমে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। শনিবার বিকেলে রোমে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেন। সে সময় কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এই বিক্ষোভের অনুমোদন দেয়নি। সেখানে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও জলকামানের পাল্টা হিসেবে বিক্ষোভকারীরা পাথর, বোতল ছুড়ে মারে। একপর্যায়ে আগুন জ্বালিয়ে কাগজবোমা ছুড়তে থাকে। সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৩০ জন ও তিনজন বিক্ষোভকারী আহত হন।
নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে যুদ্ধবিরতির দাবিতে ফিলিস্তিনি সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন। তাঁরা ‘গাজা, গাজা’ বলে স্লোগান দেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছবিতে লাল রং মাখিয়ে, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের পতাকা হাতে তাঁরা বিক্ষোভে অংশ নেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। আল–জাজিরার খবর অনুসারে, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে প্রাণহানি এ পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজারে পৌঁছেছে। নাহাল ওজ নামের একটি ঘাঁটি ৭ অক্টোবর সকালে দখলে নিয়েছিলেন হামাসের বন্দুকধারীরা। ওই ঘাঁটির ৬০ ইসরায়েলি সেনা নিহত হন। অন্যদের জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে ইসরায়েল অব্যাহতভাবে গাজায় হামলা চালাচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: