যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার হামলা অনুমতি দেয়, তবে মস্কো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে থাকা আমেরিকান ঘাঁটিতে অন্তর্ঘাতমূলক হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বিশ্লেষকেরা বিশ্বাস করেন—ইউক্রেনকে পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র অবাধে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হলেও সেগুলো সীমিত সংখ্যার কারণে এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না। বরং হামলার পর, রাশিয়া সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমকে পরিসীমার বাইরে সরিয়ে নেবে। যা কিয়েভের জন্য কোনো সামরিক উদ্দেশ্য অর্জন করা কঠিন করে তুলবে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকন্তু, এ ধরনের সিদ্ধান্ত হবে একটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জুয়া। কারণ, এই বিষয়টি বিশ্বব্যাপী আমেরিকান সামরিক সম্পদের (ঘাঁটি) ওপর মারাত্মক আক্রমণের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
গোয়েন্দা মূল্যায়ন অনুসারে, রাশিয়া সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউরোপজুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশগুলো সামরিক ঘাঁটিতে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, মস্কো যদি প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি একটি বিস্তৃত সংঘাতের ঝুঁকি কমাতে প্রকাশ্য আক্রমণের পরিবর্তে ‘গোপনে’ অন্তর্ঘাতমূলক উপায়ে তা করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে তিন ধরনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়েছে। সেগুলো হলো—আমেরিকার তৈরি এটিএসিএমএস, ব্রিটেনের তৈরি স্টর্ম শ্যাডোস ও ফ্রান্সের তৈরি স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। কিয়েভ ব্যাপকভাবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার সীমান্তের কাছে ও ক্রিমিয়ায় বিভিন্ন অবকাঠামো ও বেসামরিক এলাকাগুলোতে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
কিয়েভ রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানার জন্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে দেশগুলো কিয়েভকে এখনো সেই অনুমতি দেয়নি। পশ্চিমারা এই সীমাবদ্ধতার মাধ্যম দিয়ে মূলত এই বিষয়টি পরিষ্কার করতে চায়, তারা সরাসরি এই সংঘর্ষে জড়িত নয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: