জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার অধিবেশন শুরুর দিন যে বক্তব্য তিনি উপস্থাপন করবেন, সেটিই হবে জাতিসংঘে তার শেষ ভাষণ।
কারণ, আর চার মাস পরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করে বিদায় নেবেন তিনি। যেহেতু তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতা করছেন না এবং বর্তমানে তার বয়স ৭৮ বছর, তাই আগামীতে ফের প্রেসিডেন্ট হবেন— এমন সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। প্রসঙ্গত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দিতে পারেন শুধু রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান কিংবা তাদের অনুমোদিত প্রতিনিধিরা।
২০২০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন বাইডেন। তার মেয়াদের গত চার বছরে বিশ্বে দু’টি বড় যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এবং সেগুলো শিগগিরই থামার কোনো লক্ষণ আপাতত নেই। এ দুই যুদ্ধ হলো ইউক্রেনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ।
বাইডেন এবং তার নেতত্বাধীন প্রশাসন একদিকে যেমন ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে এই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করেছেন, তেমনি অন্যদিকে ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি এবং সামরিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে যুদ্ধকে টিকিয়েও রেখেছেন বলে ভাষ্য অনেক বিশ্লেষকের।
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে চেপে ইতোমধ্যে ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন বাইডেন। ফ্লাইট ছাড়ার আগে তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন-পিয়েরে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের বলেন, “বিশ্ব এখন বড় বড় অনেক সমস্যায় বিপর্যস্ত। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আমাদের প্রেসিডেন্ট বলবেন, কীভাবে পারস্পরিক ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা সেইসব সমস্যা-সংকটের মোকাবিলা করতে পারি, যেগুলো জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘণ করেছে।”
“ইউক্রেন যদি যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা তা সমর্থন করব। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের শক্তিশালী অবস্থান টিকিয়ে রাখতে যেসব উপকরণ প্রয়োজন, তা সরবরাহ করতে আমাদের প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
“এছাড়া আপনারা জানেন যে, গাজায় আমরা গত বেশ কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতির জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। এখনও তা সাফল্যের মুখ দেখেনি তবে আমার বিশ্বাস, সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হতে বেশি সময় আর লাগবে না।”
জাতিসংঘ অধিবেশন উপলক্ষে দু’দিনের সফরে নিউইয়র্ক এসেছেন বাইডেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ শেষে ওই দিনই জাতিসংঘের জলবায়ু ফোরামে বক্তব্য দেবেন তিনি। তারপর বুধবার ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তো লামের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এশিয়া অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য রোধ করতে ২০২০ সালে নিজ মেয়াদের শুরু থেকেই দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার জন্য মনোযোগী ছিলেন বাইডেন। যে প্রকল্প তিনি হাতে নিয়েছিলেন, তা আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে বুধবার— ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে। সূত্র : রয়টার্স।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: