চীনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল ঝাং ইউক্সিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বেইজিংয়ে বিরল বৈঠক করেছেন। তার তিন দিনের এই সফরের লক্ষ্য ছিলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যোগাযোগ জোরদার করা।
২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সুলিভান তাইওয়ান প্রণালিতে স্থিতিশীলতা, দক্ষিণ চীন সাগরে মুক্ত নৌযান চলাচলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে চীনের সহায়তা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তাইওয়ান ইস্যুতে জেনারেল ঝাং উল্লেখ করেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাইওয়ানের স্বাধীনতা একটি রেড লাইন, যা অতিক্রম করা যাবে না। তাইওয়ানের স্বাধীনতা এবং তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা একসঙ্গে থাকতে পারে না।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ঝাং বলেন, চীন দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রকে তাইওয়ানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করা বন্ধ করতে হবে এবং তাইওয়ান সম্পর্কিত মিথ্যা ধারণা প্রচার বন্ধ করতে হবে।
সুলিভানের সঙ্গে বৈঠকে ঝাং বলেন, সামরিক নিরাপত্তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয় এবং আমাদের সামরিক সম্পর্কের জন্য যে মূল্যায়ন করে তা প্রশংসনীয়।
সুলিভান জবাবে বলেন, ‘এই ধরনের বিনিময়ের সুযোগ পাওয়া বিরল’। উভয় কর্মকর্তা ভবিষ্যতে সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সুলিভান চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেন। শি বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের স্থিতিশীল, স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন হয়নি।
বুধবার সুলিভান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি নভেম্বরের ৫ তারিখে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করেন।
বৈঠকে সুলিভান ও ওয়াং বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করেন। যার মধ্যে ছিলো বাণিজ্য, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং তাইওয়ান থেকে দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত চীনা ভূখণ্ড দাবি সংক্রান্ত বিভিন্ন মতপার্থক্য।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুলিভান যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্রদের প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ওয়াং বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা খর্ব করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয় এবং ফিলিপাইনের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা বা ক্ষমা করা উচিত নয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে সিনেটর ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরের পর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে, এক বছরেরও বেশি সময় পর, গত বছরের নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোর বাইরে একটি শীর্ষ সম্মেলনে শি ও বাইডেনের মধ্যে বৈঠকের পর আলোচনাগুলো ধীরে ধীরে পুনরায় শুরু হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: