যুক্তরাষ্ট্রের ৯২ নাগরিকের রাশিয়ায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ২৮ আগস্ট বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানায়। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এমন খবর নিশ্চিত করেছে।
মস্কোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, মূল সামরিক-শিল্প সংস্থাগুলোর প্রধানরা। ওয়াশিংটনের রুসোফোবিক অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার।
ইউক্রেনের যুদ্ধ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পার করছে। স্নায়ুযুদ্ধের পর দুই দেশের কূটনীতিতে এটিই বড় সংকটের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনকে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এ ধরনের কাজের অর্থ হচ্ছে, পশ্চিমারা আগুন নিয়ে খেলছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টেলিগ্রামে প্রকাশিত তালিকায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ১৪ জন, নিউইয়র্ক টাইমসের পাঁচজন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের চারজন সাংবাদিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এসব সাংবাদিকরা মিথ্যা সংবাদ তৈরি এবং প্রচার করছেন। আমরা বর্তমান কর্তৃপক্ষকে বিরোধপূর্ণ কাজের জন্য শাস্তির অনিবার্যতা মনে করিয়ে দিচ্ছি। তা যদি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি ও তার অনুগামীদের আগ্রাসন এবং সন্ত্রাসী হামলার জন্য সরাসরি উৎসাহিত করে বা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে তবুও কিছু যায়-আসে না।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচ বলেছেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা হাস্যকর। মুক্ত সংবাদপত্রের ওপর আক্রমণের অংশ এটি।’ ইভান ১৬ মাস রাশিয়ায় আটক থাকার পর বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে চলতি মাসে মুক্তি পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল হয়ে উঠছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়েও ইউক্রেনকে কাবু করতে পারেননি পুতিন। বরং পশ্চিমাদের সহায়তায় আরও অগ্রসর হচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনী।
সম্প্রতি রুশ ভূখণ্ডে ঢুকে ইউক্রেন বাহিনীর অভিযান পরিচালনা সেই ইঙ্গিত দেয়। আর এতে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক সব পশ্চিমা অস্ত্র। যার জেরে এবার যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়ে বসেছে রাশিয়া।
দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তা ইউরোপে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাশিয়ার অভ্যন্তরে পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করে মস্কো।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: