গতকাল স্থানীয় সময় বুধবার চতুর্থবারের মতো ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন । একাধিক বিষয়বস্তু নিয়ে ভাষণে বললেও গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
আন্তর্জাতিক খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজাকে ‘কট্টরপন্থীদের থেকে মুক্ত করা হবে’ বিষয়টি উল্লেখ করলেও সেটি কীভাবে করা হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি। এ সময় তিনি আরব বিশ্বে মিত্রদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্ভাব্য মৈত্রীর বিষয়টিও উল্লেখ করেন।
ইসরায়েলের প্রতিপক্ষ বিশেষ করে ইরান ও এর সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে ইঙ্গিত করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা ও ইসরায়েলকে অবশ্যই একসঙ্গে থাকতে হবে। কারণ, আমরা যখন একসঙ্গে থাকি তখন সোজাসাপ্টা একটি বিষয়ই ঘটে: আমরা জিতি, তারা হারে।’
এ সময় ওয়াশিংটনে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকেও একহাত নেন তিনি। বিক্ষোভকারীদের ইরান টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু। তবে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, ইরানই ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে এবং যা এই মুহূর্তে এই ভবনের (ক্যাপিটল হিলে অবস্থিত কংগ্রেস ভবন) বাইরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
ভাষণে নেতানিয়াহু দাবি করেন, গাজায় দুর্ভিক্ষের জন্য হামাসই দায়ী এবং ইসরায়েল গাজার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করছে। এ সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সামরিক সহায়তা গাজায় যুদ্ধ শেষ করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে এবং একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে সীমান্ত যুদ্ধ বন্ধ করতে সহায়তা করছে।’
এই ভাষণের একপর্যায়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতারা বারবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় কী হবে সেই পরিকল্পনা জানতে চান। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা সময় ধরে দেওয়া ভাষণে এই প্রশ্নের জবাবে কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। তিনি কেবল জানান, ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করতে চায়। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজা ও পশ্চিম তীর শাসনকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে মেনে নিতেই অনিচ্ছুক তিনি।
নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি করতালি দিয়ে স্বাগত জানালেও ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এ সময় কয়েক ডজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা তাঁর ভাষণ বর্জন করে বাইরে চলে যান। বিশেষ করে গাজায় ব্যাপক প্রাণহানি রোধে ইসরায়েলের দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ না থাকার প্রতিবাদে তাঁরা ওয়াক আউট করেন।
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো ভাষণ দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর আগে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল তিনবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: