শনির দশা যেন কাটছেই না প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। গত মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনী বিতর্কের পর থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে। এরমধ্যেই একই দিনে করলেন দুই বড় ভুল। খবর এএফপি ও গার্ডিয়ানের।
আমেরিকান নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে বাইডেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে বাইডেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজের অবস্থান, নিজের স্বাস্থ্য, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের একপর্যায়ে বাইডেন বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন জয়ী হবে। এ সময় তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাহসিকতার প্রশংসা করেন। প্রশংসা করতে গিয়ে করেছেন ভুল। জেলেনস্কির দিকে ঘুরে বাইডেন বলেন, ‘ভদ্রমহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ, প্রেসিডেন্ট পুতিন।’
তবে তাৎক্ষণিক নিজেকে শুধরে নেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে বাইডেনকে সামলাতে জেলেনস্কিও সাহায্য করেছেন। বাইডেনের এমন ভুলের সঙ্গে সঙ্গেই জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি পুতিনের চেয়ে ভালো।’
এ ছাড়া সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে কমলা হ্যারিসকে ট্রাম্প হিসেবে অভিহিত করেছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমি যদি মনে করতাম যে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন, তাহলে ট্রাম্পকে নিজের ভাইস প্রেসিডেন্টও বানাতাম না। কমলা হ্যারিসের কথা বলতে গিয়ে তাকে ভুল করে ট্রাম্প বলেছেন এই প্রেসিডেন্ট।
এদিকে জো বাইডেনের পুনরায় নির্বাচিত হওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাবেক হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং অভিনেতা ও ডেমোক্র্যাট তহবিল সংগ্রাহক জর্জ ক্লুনি। প্রভাবশালী এই দুই ব্যক্তির সন্দেহ প্রকাশের ফলে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন।
বাইডেনের দীর্ঘদিনের সহযোগী পেলোসি টিভি চ্যানেল এমএসএনবিসিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট সরে দাঁড়াবেন কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া তার ব্যাপার। কিন্তু গত মাসের বিপর্যয়কর নির্বাচনী বিতর্কের পর আমরা তাকে প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলছি। কারণ, হাতে খুব বেশি সময় নেই।
এ ছাড়া নির্বাচনী দৌড় থেকে বাইডেনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান তার সবচেয়ে বড় সমর্থক জর্জ ক্লুনি।
১০ জুলাই, বুধবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় মতামত বিভাগে জর্জ ক্লুনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট তার ক্যারিয়ারে অনেক লড়াইয়েই জিতেছেন। কিন্তু একটি লড়াইয়ে তিনি জিততে পারেননি। আর তা হচ্ছে সময়ের বিপরীতে লড়াই।’
ক্লুনি আরও লেখেন, ‘আমি জো বাইডেনকে একজন সিনেটর, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভালোবাসি। আমি তাকে বন্ধুও মনে করি। তার ওপর আমার বিশ্বাস আছে।’
কিন্তু গত ১৫ জুনের অর্থ সংগ্রহ অনুষ্ঠানে তিনি যে বাইডেনকে দেখেছেন সে ২০১০ সালের বাইডেন, এমনকি ২০২০ সালের বাইডেনের মতোও ছিল না বলে ক্লুনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাইডেন হচ্ছেন সেই একই মানুষ যাকে আমরা সবাই নির্বাচনী বিতর্কে (২৭ জুন) দেখেছি। এটি বয়সের ব্যাপার। আমরা এই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনে জিততে পারব না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: