আগামী ৮ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে বাইডেন ও ট্রাম্পের যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে বাইডেনের উত্তর অনেকেরই পছন্দ হয়নি। অনেকে এখন আর বাইডেনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। বিতর্কের পর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। জো বাইডেন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে তাঁর বিকল্প হিসেবে পছন্দের শীর্ষে আছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
বাইডেনের প্রচারণা শিবির, হোয়াইট হাউস এবং ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির সাত সূত্রের বরাতে এ কথা জানা গেছে।
সিএনএনের স্টুডিওতে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেটিক প্রার্থী বাইডেনের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এই বিতর্কে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বয়সী (৮১ বছর) প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছিলেন ধরাশায়ী। ট্রাম্পের বাক্যবাণে প্রথম দিকে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি।
যদিও বিতর্কের পর এত সমালোচনার পরেও বাইডেন বলেছেন, তিনিই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বাইডেন নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে গেলে তাঁর বিকল্প কে হতে পারেন, তা নিয়েও গুঞ্জন চলছে। ডেমোক্র্যাট দলীয় সূত্র বলছে, এ তালিকায় শীর্ষে আছেন কমলা হ্যারিস। ৫৯ বছর বয়সী কমলা ছাড়াও বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যাভিন নিউসাম, মিশিগানের গ্রেচেন হুইটমার এবং পেনসিলভানিয়ার জোশ শাপিরোর মতো গভর্নরদের নাম আছে। তবে সূত্র বলছে, কমলা হ্যারিসের এখন অবস্থান যেমন, তাতে তাঁকে কেউ টপকাতে পারার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেসব সূত্র আরও বলেছে, যদি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন পেয়ে যান, তবে বাইডেনের প্রচার শিবিরের সংগ্রহ করা তহবিল কমলা হ্যারিসের কাছেই জমা হবে। প্রচার শিবিরের নিয়ন্ত্রণও তাঁর কাছে থাকবে।
তবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়ার ব্যাপারে কোনো ধরনের আলাপ–আলোচনার কথা নাকচ করেছেন কমলার সহযোগীরা। কমলার কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে বাইডেন প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেই লড়তে চান এ নারী।
ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান—উভয়ে পার্টি অঙ্গরাজ্যভিত্তিক প্রাথমিক বাছাইপর্বের (প্রাইমারি) মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন দেয়, যা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাছাইপর্বে বাইডেন ৩ হাজার ৮৯৪ ডেলিগেটের সমর্থন নিশ্চিত করেছেন। আরও কয়েকজন ডেলিগেট আছেন, যাঁরা এখনো বাইডেনকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। চলতি মাসের শেষের দিকে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে ডেলিগেটরা প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগস্টে ডেমোক্র্যাট দলীয় ন্যাশনাল কনভেনশনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্রেটিক দলীয় কৌশলবিদ মাইকেল ট্রুজিলো মনে করেন, এ ক্ষেত্রে কমলা হ্যারিসের প্রার্থিতা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। ট্রুজিলো বলেন, ডেলিগেটরা শুধু বাইডেনের ডেলিগেট নন, তাঁরা কমলা হ্যারিসেরও ডেলিগেট। প্রথম দিন থেকেই তিনি ৫০ অঙ্গরাজ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ডেলিগেটের সমর্থন পাবেন।
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির সাবেক অন্তর্বর্তী প্রধান ডনা ব্রাজিলে বলেন, বাইডেন যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে কমলাই হবেন এ মুহূর্তে বিকল্প প্রার্থী।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: