অবশেষে যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২৪ জুনসোমবার তিনি কারামুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার বিমানে উঠেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে তিনি নিজ দেশে ফিরতে পারলেন।
২৫ জুন, মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এক্স-এ বার্তা দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উইকিলিকস। তাতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের অত্যন্ত সুরক্ষিত বেলমার্শ কারাগার থেকে অ্যাসাঞ্জ মুক্ত হয়ে লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে ছুটে যান। সেখানে তার জন্য ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল।
বিবিসি একটি ভিডিওর বরাত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, জিনস ও নীল শার্ট পরা অ্যাসাঞ্জ বিমানবন্দরের পথে রয়েছেন। তবে স্বাধীনভাবে ভিডিওটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলেও জানায় বিবিসি।
অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করা ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করে বীরের খেতাব পান। এতে চরম ক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা করা হয়। এগুলোর তদন্ত করছে আমেরিকান বিচার বিভাগ।
অপরদিকে অ্যাসাঞ্জ ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা আইনি লড়াই অব্যাহত রাখেন। তাকে নিজ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক কূটনীতিও চলেও। তবু বেলমার্শ কারাগারে ১ হাজার ৯০১ দিন আটক ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে তার দেশে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
এরই মধ্যে খবর আসে, আমেরিকান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অ্যাসাঞ্জ সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছেছেন। ফৌজদারি অপরাধের দোষ স্বীকার করায় অ্যাসাঞ্জকে কারামুক্ত করা হয়েছে। তাকে নিজে দেশে যাওয়ারও অনুমতি দেওয়া হয়।অ
সমঝোতা চুক্তির শর্ত মতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে থাকতে হবে না। এমনকি যুক্তরাজ্যের কারাগারে থাকার সময়কালকে তার সাজা ভোগের সময় হিসেবেও বিবেচনা করা হবে।
২০১০ ও ২০১১ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ। ওই সময় পশ্চিমাবিরোধীরা তাকে বীরের খেতাব দেয়। তার পক্ষে দেশে দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। কিন্তু তাতেও টলেনি যুক্তরাষ্ট্র। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমা করা হবে না। যেকোনো মূল্যে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
মুক্তির শর্ত অনুযায়ী অ্যাসাঞ্জকে বুধবার সকালে ইউএস নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সাইপানের একটি আদালতে হাজির হতে হবে। সেখানে তাকে ইতিমধ্যে ঘোষিত ৬২ মাসের সাজা দেওয়া হবে।
অ্যাসাঞ্জ ২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প সময়ে এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী লোকদের গোপন নথি ও ভিডিও বেনামে প্রকাশ করতো প্রতিষ্ঠানটি। তাই একটি অনলাইন হুইসেলব্লোয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে খ্যাতি পায় উইকিলিকস।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: