ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ন্যাটো ও ইউরোপ দেশগুলোকে দিয়ে রাশিয়াকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে শাসিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার জবাব দিতে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘরের কোণে চারটি অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে।
ওয়াশিংটনকে ঘায়েল করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এমন পদক্ষেপে চিন্তায় পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। মুখে কিছু হবে না বললেও আতঙ্কে সময় পার করছেন কর্মকর্তারা।
আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা অনেক বেড়েছে। কয়েক দিন পর হতে যাওয়া ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে কয়েকটি দেশের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া তারই প্রমাণ।
এবার যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে দোড়গোড়ায় যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে সরাসরি ওয়াশিংটনকে বার্তা দিতে চাইছে রাশিয়া। মাত্র দুই দিন আগেই পুতিন হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, পশ্চিমা বিরোধী দেশগুলোকে অস্ত্র পাঠাবেন তিনি, এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর খবর জানাজানি হলো।
ঐতিহাসিকভাবেই কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাপে নেউলে সম্পর্ক। কিউবার একসময়ের জনপ্রিয় শাসক ফিদেল কাস্ত্রোকে নিয়ে কম ষড়যন্ত্র করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিউবাকে দমাতে পারেনি ওয়াশিংটন। উল্টো নিজের প্রচেষ্টায় বিশ্বের অন্যতম আধুনিক চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে কিউবা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিরশত্রু’ কিউবায় যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে রাশিয়া।
কিউবা বৃহস্পতিবার জানায়, আগামী সপ্তাহে হাভানায় এসে পৌঁছাবে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ। তবে রুশ এই চার যুদ্ধজাহাজে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র থাকবে না।
তাই ওই অঞ্চল কোনো হুমকির মুখে থাকবে না বলেও জানিয়েছে হাভানা। কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন মেনেই ওই যুদ্ধজাহাজগুলো হাভানায় আসছে। কিউবা ও রুশ ফেডারেশনের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণেই হাভানায় ভিড়ছে এই যুদ্ধজাহাজগুলো।
কয়েক দিন আগে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন যে, ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। কিউবা ও ভেনেজুয়েলায় নৌমহড়া চালানোই তাদের উদ্দেশ্য বলেও উল্লেখ করেছিলেন ওই কর্মকর্তা। এরপরই কিউবা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হলো।
কোনো যুদ্ধজাহাজেই পরমাণু অস্ত্র থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেছে কিউবা। তাই কিউবায় অবস্থানকালে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ওই অঞ্চলে কারও জন্য হুমকি হবে না বলেও জোর দিয়েই উল্লেখ করেছে হাভানা।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তবে কিউবার রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ পাঠানো এই উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এত অল্পসংখ্যক যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজকে হুমকি মনে করে না ওয়াশিংটন। কিন্তু তারপরও দেশটির নাম রাশিয়া বলে ‘ভরসা’ করতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। তাই ওই নৌমহড়া নজরদারি করার কথা জানিয়েছে নৌবাহিনী।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: