নিউইয়র্কগামী ফ্লাইটে তিন কৃষ্ণাঙ্গ হলেন বৈষম্যের শিকার

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩০ মে ২০২৪ ১৯:৩৪

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

এবার আমেরিকান এয়ারলাইনসের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন তিনজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ। গত ৫ জানুয়ারি, অ্যারিজোনার ফিনিক্স থেকে নিউইয়র্কগামী এক ফ্লাইট থেকে শরীরের গন্ধের অভিযোগ এনে তাদেরকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তারা ৩ জন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এমন খবর পাওয়া যায়।

অ্যালভিন জ্যাকসন, ইমানুয়েল জিন জোসেফ ও জেভিয়ার ভেলের করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই তিনজনসহ আরও যে কৃষ্ণাঙ্গরা বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন—তাঁরা একসঙ্গেও বসেননি এবং কেউ কাউকে চিনতেনও না। কিন্তু সেই ফ্লাইটের প্রত্যেক কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীকেই তাঁদের আসন থেকে তুলে বের করে দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই আচরণের শিকার ব্যক্তিরা বলেন, ‘আমরা কালো হওয়ায় আমেরিকান এয়ারলাইনস আমাদের আলাদা করেছে, আমাদের বিব্রত এবং আমাদের অপমান করেছে।’

টেক্সাসভিত্তিক এয়ারলাইনসটি বলেছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। কারণ, অভিযোগগুলো তাঁদের মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ফিনিক্স থেকে নিউইয়র্কগামী বিমানটি যখন ছাড়বে, সে রকম সময়ে একজন ফ্লাইট ক্রু এসে কৃষ্ণাঙ্গদের বিমান থেকে নেমে যেতে বলেন। অ্যালভিন জ্যাকসন, ইমানুয়েল জিন জোসেফ ও জেভিয়ার ভেলের কাছে তখন পরিষ্কার হয় যে কেবল গায়ের রঙের কারণেই তাঁদের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই তিন ব্যক্তিই সেদিন সকালে কোনো ঝামেলা ছাড়াই লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বিমানে করে অ্যারিজোনায় এসেছিলেন।

এই তিনজনসহ বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় মোট পাঁচজন কৃষ্ণাঙ্গকে। বিমানের দরজায় এয়ারলাইনসটির এক কর্মী তাঁদের জানান, একজন শ্বেতাঙ্গ ফ্লাইট ক্রু অজ্ঞাত যাত্রীর শরীরের গন্ধ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন।

বিবৃতিতে মামলাকারীরা বলেন, ‘আমাদের গায়ের রং ছাড়া সেই ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই। পরিষ্কারভাবে এটি বর্ণবাদী বৈষম্য।’

সেই রাতে আমেরিকান এয়ারলাইনসের কর্মীরা এই ব্যক্তিদের অন্য ফ্লাইটে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে রাতে নিউইয়র্কগামী আর কোনো ফ্লাইট ছিল না। তাই তাঁদের আসল ফ্লাইটেই আবার ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়।

অভিযোগপত্রে আরও এসেছে যে ফ্লাইটজুড়ে—বিমানে পুনরায় ওঠা থেকে নামা পর্যন্ত শ্বেতাঙ্গ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতিবার সাক্ষাতেই বাদীরা অনুভব করেছেন বিব্রত, অপমান, উদ্বেগ, রাগ ও কষ্টের অনুভূতি।

আমেরিকান এয়ারলাইনস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা বৈষম্যের সব অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিই এবং আমরা চাই, আমাদের গ্রাহকেরা যেন ইতিবাচক অভিজ্ঞতা পান।’

কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিরা যখন বিমানের বাইরে ছিলেন তখন পাইলট এক ঘোষণায় বলছিলেন, গায়ের দুর্গন্ধের কারণে সৃষ্ট এক ঘটনার জন্য ফ্লাইট শুরু হতে দেরি হচ্ছিল। তবে বাদীরা এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মামলাকারীদের একজন ইমানুয়েল জিন জোসেফ বলেন, সেদিনের অভিজ্ঞতা তাঁকে নাগরিক অধিকার সংগ্রামের নায়ক রোজা পার্কসের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছিল। রাষ্ট্র-অনুমোদিত জাতিগত বৈষম্যের কারণে রোজা পার্কসকে ১৯৫৫ সালে আলাবামায় বাসের পেছনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: