ব্রাজিলে বন্যায় উদ্ধারকাজ চলমান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৬ মে ২০২৪ ০৮:০৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা অন্তত ৭৮ এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার হয়েছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থার প্রতিবেদন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, নিখোঁজ এবং আটকা পড়াদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা একনও চালানো হচ্ছে। 

কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে রিও গ্রান্ডে ডো সুলের রাজধানী পোর্তো আলেগ্রে গতকাল সারা দিন ছিল পানিতে ডুবে ছিল। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে শহরের রাস্তা ছোট নদীতে পরিণত হয়েছে! সেখানে অনেকেই ছোট নৌকায় চলাচল করেছে। বাসিন্দারা ছাদে দাঁড়িয়ে উদ্ধার হ্ওয়ার চেষ্টাও করেছেন।

সর্বশেষ এই বিপর্যয়কর আবহাওয়ায় অন্তত ১০৫ জন নিখোঁজ বলে জানিয়েছেন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা।

আটকে পড়া বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েচে পানি এবং বিদ্যুৎ সংকট। তাদের উদ্ধারে ৩ হাজারেরও বেশি সৈন্য, অগ্নিনির্বাপক এবং অন্যান্য উদ্ধারকারীরা শহরটিতে যান।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং সরকারের একাধিক মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে রিও গ্রান্ডে ডো সুলের গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট বলেছেন, ‘সব দেখে যুদ্ধ দৃশ্যের মতো মনে হচ্ছে এবং এই পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পর যুদ্ধোত্তর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হবে।’

লুলা দা সিলভা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, রাজ্যটির পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেবে সরকার।

পোর্তো আলেগ্রে ছাড়া আরও ৩৪১টি শহর ও গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে।

শত শত রোগীকে নিয়মিত হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর সৈন্যরা ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করেছে। বেসামরিক ব্যক্তিরাও লাইফ জ্যাকেট, পানি এবং জ্বালানিসহ মৌলিক প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহের জন্য স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেছে।

প্রায় ১৪ লাখ বাসিন্দার শহর পোর্তো আলেগ্রে দিয়ে প্রবাহিত হওয়া গুয়াইবা নদীর পানি রেকর্ড ৫ দশমিক ৩ মিটার (১৭ দশমিক ৪ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানায় স্থানীয় পৌরসভা। এই নদীর পানি এর আগে ১৯৪১ সালের প্রলয়ংকরী বন্যায় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৭৬ মিটার উঁচু দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে রিও গ্রান্দে ডো সুল প্রায়ই চরম আবহাওয়ার মুখে পড়ে। কখনো কখনো সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। কখনো আবার দেখা দেয় খরা। স্থানীয় বিজ্ঞানীদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেখানকার আবহাওয়া আরও চরম রূপ নিচ্ছে।

ব্রাজিলে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই প্রথম নয়। চলতি বছরের বিগত চার মাসে অন্তত চার দফা বন্যা হয়েছে। এর আগে, গত বছরের জুলাই, সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসের বন্যায় অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: