যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৫ লাখ মুসলিম নাগরিক বসবাস করেন। মুসলিম হওয়ায় তাদের প্রায়ই বিভিন্ন হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামফোবিয়া (ইসলামবিদ্বেষ) ও মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনা টানা বৃদ্ধির পর ২০২২ সালে কিছুটা কমে। তবে ২০২৩ সালে এই ধরনের ঘটনা আবার বেড়ে গেছে। শুধু বৃদ্ধি পেয়েছে তাই নয়, গত বছর এই ধরনের ঘটনা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন হলো আমেরিকান ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিল। ২ এপ্রিল, মঙ্গলবার এই সংগঠনের এক প্রতিবেদনে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে আসে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আমেরিকান ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামবিদ্বেষের মোট ৮ হাজার ৬১টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি। এমনকি সংগঠনটির ৩০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৬০০টি ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও একই ধরনের ধারণা দিয়েছে। এসব সংগঠন বলছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘিরে ইসলামোফোবিয়া (ইসলামবিদ্বেষ), ফিলিস্তিনিবিরোধী জনমত ও ইহুদিবিদ্বেষ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে বেড়েছে।
আমেরিকান ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিল জানিয়েছে, ২০২২ সালে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসলামবিদ্বেষের ঘটনা কমে। তবে ২০২৩ সালেই তা আবারও বাড়তে থাকে। গত বছরের প্রথম ৯ মাসের প্রতি মাসে গড়ে ৫০০ এর মতো এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে শেষের তিন মাসে তা অনেক বেড়ে যায়। শেষের তিন মাসের প্রতি মাসে ১২০০টি করে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামোফোবিয়ার এই বৃদ্ধির কারণ হলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে সংঘাত। ওই বছর অভিবাসন ও আশ্রয়, কর্মসংস্থান বৈষম্য, ঘৃণামূলক অপরাধ ও শিক্ষা বৈষম্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় ইতিমধ্যে ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: