বন্দর নির্মাণের সরঞ্জাম নিয়ে গাজার পথে আমেরিকান সামরিক জাহাজ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:১১

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ বিতরণের সুবিধার্থে ভাসমান বন্দর নির্মাণের জন্য সরঞ্জাম নিয়ে আমেরিকান সামরিক জাহাজ গাজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক এস বেসন গতকাল শনিবার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ঘাঁটি ছেড়ে যায় বলে বিবিসি জানিয়েছে।

গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছাতে ভাসমান বন্দর নির্মাণের ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে দুর্ভিক্ষ ‘প্রায় অনিবার্য বলে’ বারবারই সতর্ক করছে জাতিসংঘ। অনেক শিশু এরই মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।

গাজায় স্থল ও বিমানের মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ কঠিন ও ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ত্রাণবাহী গাড়িবহরের ওপর বন্দুক হামলা ও লুটপাটের শিকার হওয়ার পর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি স্থল অভিযান স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

প্যারাস্যুট বিভ্রাটের কারণে গত শুক্রবার বিমান থেকে ফেলা ত্রাণের প্যাকেটের আঘাতে অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে সিএনএন।

সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এক্স প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেছে, বাইডেনের ঘোষণা দেওয়ার ৩৬ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আমেরিকান জাহাজটি রওনা দেয়। গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে অস্থায়ী বন্দর স্থাপনের সরঞ্জাম রয়েছে।’

পেন্টাগন বলছে, বন্দরটি নির্মাণে ১ হাজার সৈন্য়ের ৬০ দিনের মতো সময় লাগবে। তাদের কেউই তীরে যাবে না। তবে, গাজার এখনকার যে পরিস্থিতি, তাতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে দাতব্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে।

এদিকে প্রায় ২০০ টন খাদ্যের ত্রাণবাহী একটি জাহাজ ওপেন আর্মস সাইপ্রাসের বন্দর ছেড়ে আসতে আজ রোববার সকালে ছাড়পত্রের অপেক্ষায় ছিল বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়। সোমবারের আগেই জাহাজটি যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা দেয়, গাজার নিকটবর্তী ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ সাইপ্রাস থেকে সরাসরি ত্রাণ পাঠানোর জন্য নতুন সমুদ্রপথ উন্মুক্ত করা হবে। স্পেনের দাতব্য সংস্থা ওপেন আর্মসের জাহাজটিতে আমেরিকান দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের দেওয়া খাদ্য সরবরাহ রয়েছে।

বন্দর নির্মাণের আগে সমুদ্রপথে সরবরাহ করা ত্রাণ কীভাবে নিরাপদে তীরে পৌঁছাবে তা স্পষ্ট নয়। গাজায় কার্যকর কোনো বন্দর নেই এবং এর আশপাশের জলসীমা বড় জাহাজের জন্য খুব অগভীর।

ওপেন আর্মসের প্রতিষ্ঠাতা অস্কার ক্যাম্পস বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, গন্তব্যের স্থানে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের একটি দল ত্রাণ গ্রহণের জন্য একটি বন্দর তৈরি করছে। তবে এই বন্দর ঠিক কোথায় তা গোপন রাখা হয়েছে।

সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ইসরায়েল বলেছে, সাইপ্রাসে জাহাজগুলোতে ইসরায়েলি মানদণ্ড অনুসারে নিরাপত্তা যাচাইয়ের পরে ত্রাণ সরবরাহ করা হবে।

গাজায় পাঁচ মাস ধরে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। যুদ্ধের কারণে এই অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় ক্রমে বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার চার ভাগের এক ভাগ মানুষই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

গাজায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে আরও বেশি পথ উন্মুক্ত করতে এবং অতিরিক্ত ক্রসিং খুলে স্থল সরবরাহ বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে পশ্চিমাদের অনুরোধ গ্রাহ্য করছে না ইসরায়েল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: