ইউক্রেনে যদি সাহায্য অব্যাহত রাখা না হয়, তাহলে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তাদের যে সাহায্য করেছে, তারা যেসব অর্জন করেছে, সবই সংশয়ের মধ্যে পড়ে যাবে এবং তাদের জয় অনিশ্চিত হয়ে যাবে। ন্যাটো মহাসচিবের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এসব কথা বলেন। খবর দ্য টেলিগ্রাফ, আরব নিউজ।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে এ পর্যন্ত বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সম্প্রতি কংগ্রেসের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা কিয়েভকে এভাবে উদার সমর্থন করতে অসম্মতি জানিয়েছে। তারা বলছেন, পুতিনের বিরুদ্ধে এ লড়াইয়ের কোনো শেষ দেখা যাচ্ছে না। ফলে অনিশ্চিত এ সাহায্য দীর্ঘদিন অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়।
এ অবস্থায় কংগ্রেসে ইউক্রেনে সাহায্যের পক্ষে লবিং করতে ওয়াশিংটন সফরে যান ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। তার সঙ্গে আলোচনায় ব্লিঙ্কেন ইউক্রেনে সহায়তা বন্ধের প্রতিক্রিয়াগুলো তুলে ধরেন। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেন, আমেরিকান সাহায্য ছাড়া, এক কথায় বলতে গেলে এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয়রা যা অর্জন করেছে এবং আমরা তাদের যা অর্জন করতে সাহায্য করেছি সবই বিপদের মুখে পড়ে যাবে।
আর একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের সমস্ত প্রতিপক্ষের কাছে একটি ভুল বার্তা পাঠাচ্ছে। আর সেটি হচ্ছে, স্বাধীনতার প্রতিরক্ষা বা গণতন্ত্র রক্ষার ব্যাপারে আমরা সিরিয়াস নই। ইউক্রেনে তহবিল বন্ধের বিষয়টি পুতিনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং তিনি ইউক্রেনকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন এমনকি আমাদেরকেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অকাতরে সাহায্য দিয়েছে ইউক্রেনকে। কিন্তু এখন আর সেই উদার সহায়তায় বাধ সেধেছে বিরোধী দল রিপাবলিকানের সদস্যরা। তারা ইউক্রেনের জন্য বাইডেনের প্রতিশ্রুত ৬১ বিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা আটকে দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে স্টলটেনবার্গ ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে বলেছেন, তিনি ৩০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার আমেরিকান আইনপ্রণেতাদের সাথে দেখা করবেন এবং তাদের বুঝানোর চেষ্টা করবেন, আমাদের স্বার্থেই ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। কারণ এ যুদ্ধে পুতিন জিতে গেলে তা হবে ইউক্রেনীয়দের জন্য একটি ট্র্যাজেডি। একইসঙ্গে এটি পুরো বিশ্বকে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে এবং আমাদের সবাইকে আরও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় নিয়ে যাবে।
ন্যাটো মহাসচিব বলেন, যদি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাহলে বিষয়টি কেবল পুতিনকেই নয়, বরং উত্তর কোরিয়া, ইরান ও চীনের মতো দেশগুলোকেও কর্তৃত্ববাদী শক্তি প্রয়োগে উৎসাহিত করবে। আজ যেমন ইউক্রেন হামলার শিকার হয়েছে, আগামীকাল তার জায়গায় তাইওয়ানও হামলার শিকার হতে পারে।
ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের আগে স্টলটেনবার্গ পেন্টাগনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং শীর্ষ আমেরিকান সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল চার্লস সিকিউ ব্রাউনের সাথে এবং পরে হোয়াইট হাউসে বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে দেখা করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: