যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহজুড়ে চলা শীতকালীন ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯। এর মধ্যে টেনেসিতে অন্তত ২৫ এবং ওরেগনে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভয়াবহ ঝড়ের কবলে থাকা দুটি অঞ্চলেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। পুরো যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক হাজার মানুষ বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। খবর বিবিসির।
এ সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঝড় থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সামনের সপ্তাহের শুরু পর্যন্ত ঠান্ডা বাতাস অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান হয়েছে।
টেনেসি এবং ওরেগনে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সে সঙ্গে ইলিনয়, পেনসিলভানিয়া, মিসিসিপি, ওয়াশিংটন, কেনটাকি, উইসকনসিন, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং অন্যান্য স্থানেও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
গত বুধবার ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে শক্তিশালী ঝড়ে বিদ্যুতের লাইন ভেঙে একটি গাড়ির ওপর পড়লে সেই গাড়িতে থাকা তিন আরোহী বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। গাড়িতে থাকা একটি শিশু প্রাণে বেঁচে গেছে।
কেনটাকিতে গাড়ি দুর্ঘটনায় একজন এবং ইলিনয়ে চার ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তাধীন। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, সিয়াটলে চার দিনের মধ্যে পাঁচ গৃহহীন মারা গেছে।
মিসিসিপিতে চালকদের কেবল প্রয়োজন হলেই গাড়ি চালাতে এবং রাস্তায় কালো বরফ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে সতর্কতা। রাজ্যটিতে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শীতকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
ঝড়ের কারণে পানির ঘাটতি সম্পর্কে অনলাইনে গুজব ছড়ানো এবং তার জেরে বাসিন্দারা বাথটাবে পানি সংরক্ষণ করছে কি না তা তদন্ত করে দেখছেন মিসিসিপির কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, এই গুজবের কারণে অঙ্গরাজ্যের রাজধানী জ্যাকসনের হাজার হাজার বাসিন্দা পানির সংকটে রয়েছে।
পানিসংক্রান্ত নানা সমস্যায় টেনেসিও জর্জরিত। মেমফিস এলাকায় পাইপ ভেঙে যাওয়ার কারণে ৪ লাখ মানুষ সেদ্ধ পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে পানি পান, বরফ তৈরি, দাঁত ব্রাশ করা, থালাবাসন ধোয়া এবং খাবার তৈরির জন্য সেদ্ধ বা বোতলজাত পানি ব্যবহারের জন্য বলেছে।
শীতকালীন আবহাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরে এলেও সারা দেশের কয়েক হাজার মানুষ এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত ওরেগনের প্রায় ১০ হাজার, উত্তর ক্যারোলিনায় ৮ হাজার, ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭ হাজার এবং কেনটাকিতে ৪,৩০০ মানুষ ছিল বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়।
অন্যদিকে, উষ্ণ বাতাস এবং বৃষ্টির কারণে মধ্য-পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন কয়েকজন আবহাওয়াবিদ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: