বিশ্বের শীর্ষ ধনী প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ইলন মাস্ককে অনেকেই একজন ভদ্র ও অমায়িক মানুষ বলেই জানে। কিন্তু তাকে যারা ভালো করে চেনে-জানে তারা বলছেন একেবারেই ভিন্ন কথা।
শুধু চেনে-জানে এমন মানুষই নন, তার কোম্পানি টেসলার পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্যও বলছেন, এলএসডি, কোকেইন, এক্সট্যাসি ও ম্যাজিক মাশরুমের মতো ভয়াবহ সাইকেডেলিক ড্রাগ বা মাদক সেবন করেছেন ইলন মাস্ক এবং এখনও প্রায়ই করেন।
যেসব ড্রাগ মানুষকে হ্যালুসিনেশন বা হ্যালুসিনেশনের মতো বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা এনে দেয় সেগুলোকে বলা হয় সাইকেডেলিক ড্রাগ।
বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এই ধনী ব্যক্তির চারপাশের মানুষেরা আরও বলছেন, ইলন বিশ্বের যেখানেই যান সেখানেই বন্ধু-বান্ধব ও অতিথিদের নিয়ে আড্ডাবাজি ও মাদক সেবন করে নেশায় বুদ হয়ে থাকেন।
তবে এটা তিনি করেন অতি গোপনে। ‘প্রাইভেট পার্টি’তে মাদক সেবনের আগে বন্ধু-বান্ধব যারা তার সঙ্গ দেয়, প্রথমে তাদের ফোনগুলো জমা নিয়ে নেন ইলন।
মানসিক অবসাদ কাটাতে গাঁজা ও কেটামাইনের মতো ড্রাগ প্রকাশ্যে জনসমক্ষেই সেবন করেন বলে ইলন মাস্ক নিজেই বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছেন। যেমন ২০১৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে দেয়া এক পার্টিতে কয়েকটি অ্যাসিডের ট্যাবলেট সেবন করেছিলেন তিনি।
এরপর পরের বছর মেক্সিকোয় এক পার্টিতে ম্যাজিক মাশরুম সেবন করেছিলেন। কখনও কখনও নিজের সহোদর ভাই কিম্বল মাস্ককে সাথে নিয়েও মাদক নেন ইলন। যেমন ২০২১ সালে মিয়ামির এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেখানে ভাইকে নিয়ে কেটামাইন সেবনে মেতে উঠেছিলেন তিনি।
এনমকি নিজের কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গেও মাতেন মাদক সেবনে। যেমন সম্প্রতি টেসলার পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও বর্তমান স্পেসএক্সের কর্মকর্তা স্টিভ জারভেস্টনের সঙ্গে অবৈধ মাদক সেবন করেছেন।
গত বছর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, সিলিকন ভ্যালির শীর্ষ ব্যক্তিদের মধ্যে ‘ড্রাগ সেবন’ একটি প্রচলিত ঘটনা। তবে মাস্কের মতো কেউ, যার রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স সরকারিভাবে শত শত কোটি ডলারের প্রকল্প কাজ করছে, তার এমন অবৈধ মাদক সেবনের বিষয়টি সত্যিই শঙ্কার বিষয়।
আমেরিকান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সাবস্টেন্স অ্যাবিউজ অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ বলেছে, সরকারি চুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানিকে ‘ড্রাগ-ফ্রি ওয়ার্কপ্লেস’ নামের আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
২০১৮ সালে হঠাতই এক টুইট করে মাস্ক বলেছিলেন, কোম্পানিকে ব্যক্তিমালিকানাধীন করার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছেন তিনি। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের শঙ্কা, ওই টুইট করার সময় মাস্ক সম্ভবত ‘নেশাগ্রস্থ’ ছিলেন।
ওই টুইটের পরপরই মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করে আমেরিকান নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি), যা শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে চার কোটি ডলার জরিমানা গোনা পর্যন্ত। এছাড়া টেসলার চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পাশাপাশি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে দুইজন স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দিতেও বাধ্য হন মাস্ক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: