১৯৭৪ সালে একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক গ্লিন সিমন্স। দোষীসাব্যস্ত হয়ে ৪৮ বছর কারাভোগও করেন তিনি। গত জুলাইয়ে মুক্তি পান সিমন্স। আর গেল ১৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন আদালত। অর্থাৎ কোনো অপরাধ না করেই এত দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকতে হয়েছে সিমন্সকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গ্লিন সিমন্সের বয়স এখন ৭০ বছর। ১৯৭৫ সালে যখন হত্যা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়, তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর।
সিমন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ১৯৭৪ সালে ওকলাহোমা শহরের উপকণ্ঠে একটি মদের দোকানে ডাকাতির সময় তিনি এবং তার সহযোগী ডন রবার্টস মিলে ক্যারোলিন সু রজার্স নামের এক নারীকে হত্যা করেন। এই মামলার রায়ে প্রথমে সিমন্সকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলেও, পরে সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এরপর থেকে সিমন্স ৪৮ বছর ১ মাস ১৮ দিন জেল খাটেন। সিমন্সই এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করা নির্দোষ ব্যক্তি।
শুরু থেকেই সিমন্স বলে আসছিলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি নিজ রাজ্য লুইজিয়ানায় ছিলেন। কিন্তু এই দাবি এতদিন তিনি প্রমাণ করতে পারছিলেন না। অবশেষে চলতি বছরের জুলাই মাসে একটি জেলা আদালত সিমন্সের সাজা বাতিল করেন।
রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউটররা বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের কাছে এই মামলার সব প্রমাণ তুলে দেননি। তাছাড়া মামলার একজন সাক্ষী অন্য আরও কয়েকজনকেও সন্দেহভাজন হিসেবে সনাক্ত করেছিল। সিমন্স ও রবার্টসের শাস্তি হয়েছিল এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষীর সাক্ষ্যতে। ডাকাতির ঘটনার সময় সে গুলি খেয়েছিল। ওই সাক্ষীকে পুলিশ সন্দেহভাজনদের সনাক্ত করার জন্য নিয়ে আসলে সিমন্স ও রবার্টসসহ কয়েকজনকে সনাক্ত করে। এর আগে, ২০০৮ সালে প্যারোলে মুক্তি পান ডন রবার্টস।
ওকলাহোমা কাউন্টি জেলা জজ অ্যামি পালুমবো সিমন্সকে নির্দোষ ঘোষণা করে বলেছেন, সিমন্স যে অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগ করেছেন, তিনি সেই অপরাধ করেননি। এ বিষয়ে স্পষ্ট এবং সন্তোষজনক প্রমাণ পেয়েছে আদালত।
ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে ভুল বিচারে কারাভোগ করা ব্যক্তিরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার পান। সিমন্সও এ ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন বলে জানা গেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: