কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৮টি দেশ সম্প্রতি একটি চুক্তি করেছে। এবার মানদণ্ড লেখার বা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা পরীক্ষার পাশাপাশি কীভাবে সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এসব বিষয়েও ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (এনআইএসটি) জানায়, এআই ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা চালানোর বিষয়ে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মতামত নেয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী গিনা রাইমন্ডো বলেন, ‘এ প্রচেষ্টার মূল উৎস হিসেবে অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া এআই-বিষয়ক নির্বাহী আদেশ মূল ভূমিকা পালন করছে। সে সময় প্রেসিডেন্ট এআই প্রযুক্তির জন্য শিল্পমান তৈরিসহ বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের কথা জানান, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও দেশটি এ উদীয়মান প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে।’
একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এআই প্রযুক্তি মূল্যায়নে বাইডেন প্রশাসন এমন নির্দেশনা তৈরি করছে, যা বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা পরীক্ষার মতো পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের মানোন্নয়নেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ও জনগণের মতামত নেয়ার বিষয়ও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
জেনারেটিভ এআই মূলত এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা, যেখানে সাধারণ কমান্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন টেক্সট, ছবি ও ভিডিও তৈরি করা যায়। ২০২২ সালে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন কোম্পানির এআই প্রকাশ্যে আসার পর এগুলো নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়। এর মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে আসা, নির্বাচনের ফলে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তারসহ মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকির কথাও আলোচনায় উঠে এসেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, বাইডেনের আদেশের পরই এআই প্রযুক্তি পরীক্ষার মানদণ্ড নির্ধারণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে মার্কিন সংস্থাগুলো। এর মাধ্যমে প্রযুক্তির রাসায়নিক, জৈবিক, রেডিওলজিক্যাল, পারমাণবিক ও সাইবার নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলো মোকাবেলা করা যাবে।
অন্যদিকে, এ পরীক্ষার জন্য নির্দেশিকা তৈরির কাজ করছে এনআইএসটি। এর মধ্যে রয়েছে রেড-টিমিং নামে পরিচিত এক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির ঝুঁকি, ব্যবস্থাপনা ও মান নির্ধারণের সেরা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন নতুন ঝুঁকি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে এ পদ্ধতি। অগাস্টে আয়োজিত শীর্ষ এক সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রথমবার জনসমক্ষে রেড-টিমিংয়ের পদ্ধতি দেখানো হয়, যার আয়োজক ছিল ইথিক্যাল হ্যাকার দল এআই ভিলেজ, অলাভজনক সংস্থা সিডএআই ও হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স। প্রেসিডেন্টের দপ্তর আরো বলেছে, কীভাবে রেড-টিমিং পদ্ধতি এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়টিও দেখানো হয়েছে এ আয়োজনে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: