মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৩ দেশের ৩৭ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের সর্বজনীন ঘোষণার ৭৫ বছর পূর্তি সামনে রেখে ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা দেয় ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র দফতর ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে আফগানিস্তান, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, হাইতি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, লাইবেরিয়া, চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, সিরিয়া ও উগান্ডার ৩৭ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
ইরানের কুদস ফোর্স কমান্ডার কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে এজেন্ট নিয়োগ দানের অভিযোগে দু’জন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওপর শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বাগদাদে আমেরিকান বিমান হামলায় সোলেইমানি নিহত হলে তার হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিল ইরান। তিনি তেহরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারের কারিগর ছিলেন।
আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের ওপর নিপীড়নের সাথে জড়িত থাকার দায়ে ক্ষমতাসীন সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকান অর্থ মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে সরকারের দু’জন মন্ত্রীও রয়েছেন।
চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত থাকার দায়ে মধ্যম পর্যায়ের দু’জন চীনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা পরিচালনা করছে চীন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ ভোগদখল করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যাংকে থাকা অর্থ তুলতে পারবেন না। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সাথে কোনো ব্যবসা ও লেনদেন করতে পারবে না।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থব্যবস্থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের থেকে নিরাপদ রাখার প্রতিশ্রুতি পূরণে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, যুক্তরাজ্য ও কানাডাকে সাথে নিয়ে সমন্বিতভাবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। গত এক বছরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫০-এর বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেনে জড়িত থাকলে আমেরিকান নাগরিকরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন।
সূত্র : রয়টার্স
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: