আলোচিত চ্যাটজিপিটি উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ে নাটকীয়তা চলছে। এবার প্রতিষ্ঠানটির কয়েক’শ কর্মী পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। পরিচালনা পর্ষদের কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে তাঁরা পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন।
গতকাল ২০ নভেম্বর সোমবার লেখা খোলা চিঠিতে ওপেনএআইয়ের কর্মীরা মোটাদাগে দুটি দাবি তুলেছেন। এক. প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদকে পদত্যাগ করতে হবে। দুই. চাকরি খোয়ানো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান ও পদত্যাগ করা প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রোকম্যানকে ওপেনএআইয়ে ফেরাতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানিয়েছেন, এই দাবিগুলো মানা না হলে ওপেনএআইয়ের ৭০০ কর্মীর প্রায় সবাই পদত্যাগ করতে পিছপা হবেন না। প্রয়োজনে তাঁরা স্যাম অল্টম্যান ও গ্রেগ ব্রোকম্যানের সঙ্গে মাইক্রোসফটে যোগ দেবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ গত শুক্রবার স্যাম অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করার কথা জানায়। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্যামের সক্ষমতা নিয়ে পর্ষদের আস্থার ঘাটতির কথা জানানো হয়।
৩৮ বছর বয়সী স্যাম ওপেনএআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পরিচালনা পর্ষদ তাঁকে বরখাস্ত করায় ওপেনএআইয়ের প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন গ্রেগ ব্রোকম্যান। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
স্যাম অল্টম্যান ও গ্রেগ ব্রোকম্যান আরেক প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটে যোগ দিচ্ছেন বলে গতকাল জানা গেছে। মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্যাম অল্টম্যান ও গ্রেগ ব্রোকম্যান মাইক্রোসফটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত একটি আধুনিক গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেবেন।
অন্যদিকে নতুন সিইও হিসেবে এমেট শেয়েরকে নিয়োগ দিয়েছে ওপেনএআই। এমেট যুক্তরাষ্ট্রের টিভি সম্প্রচারমাধ্যম টুইসের সাবেক প্রধান।
খোলা চিঠিতে সই করা ওপেনএআইয়ের কর্মীরা বলেন, ‘আমরা চাই, অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। দাবি মেনে পরিচালনা পর্ষদের বাকি সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে। স্যাম অল্টম্যান ও গ্রেগ ব্রোকম্যানকে ফেরাতে হবে। তা না হলে সবাই পদত্যাগ করবেন। স্যাম-গ্রেগের সঙ্গে মাইক্রোসফটে চলে যাবেন।’
প্রযুক্তিবিষয়ক সাময়িকী ‘ওয়ারড’র সাংবাদিক কারা শুইসার প্রথম এই খোলা চিঠির কথা প্রকাশ্যে আনেন। এরপর মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এদিকে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেনএআইয়ের শীর্ষ পদে রদবদলের নাটকীয়তা ঘিরে প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগকারী উদ্বেগে ভুগছেন। তাঁদের মতে, এর জেরে কোটি কোটি ডলার লোকসানের মুখোমুখি হতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কেউ কেউ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছেন। আলোচনা করছেন আইনি পরামর্শকদের সঙ্গেও।
এ বিষয়ে জানতে ওপেনএআই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: