ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিক চুক্তি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


ভিয়েতনামের সঙ্গে নতুন এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই চুক্তির নাম ‘দ্য কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’। এর উদ্দেশ্য ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের সম্পর্ক গড়ে তোলা। বলা হচ্ছে, সাবেক বিরোধী এই দু’দেশ এই চুক্তির মাধ্যমে নতুন করে ঘনিষ্ঠ হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর জো বাইডেন বলেছেন, চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব খর্ব করার কোনো চেষ্টা করছে না যুক্তরাষ্ট্র।

দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষ করে রোববার তিনি ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে যান। ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনা সদস্য ত্যাগ করার কমপক্ষে ৫০ বছর পরে দেশটি সফরে গেলেন জো বাইডেন।

দু’বছর ধরে ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এশিয়ায় চীনের প্রভাবকে মোকাবিলায় এ দেশটিকে ওয়াশিংটন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এটাকে ছোট কোনো কৃতিত্ব হিসেবে দেখা ঠিক নয়।

ভিয়েতনাম এমনিতেই চীনের সবচেয়ে পুরনো এবং কট্টর বন্ধু। তাদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে কূটনৈতিক সম্পর্কের হাত প্রসারিত করা ওয়াশিংটনের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের এক অংশীদারিত্ব।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হ্যানয়ে পৌঁছে সাংবাদিকদের বলেছেন, চীনকে নিয়ন্ত্রণ বা বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য কোনো কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র।

আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে তারা স্থিতিশীলতা বজায় রাখছেন। তিনি বলেন, আমরা শীতল যুদ্ধের টার্ম নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি বলে মনে হয়। আসলে বিষয়টি তা নয়। বিষয়টি হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতা অর্জন। আমি দেখতে চাই চীন অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়েছে। একই সঙ্গে আমি দেখতে চাই, তারা আইনের শাসনে সফল হয়েছে।

ওদিকে ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে এরই মধ্যে বেইজিংয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। একে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ‘শীতল যুদ্ধ মানসিকতা’ বলে বর্ণনা করেছে। চুক্তির শিরোনামকে প্রতীকি মনে হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে এর অর্থ হবে ব্যাপক অর্থে বাণিজ্যিক চুক্তি। এর ফলে চীনের ওপর ভিয়েতনামের নির্ভরতা কমে আসবে। দেশটিতে আছে যুব ও উচ্চ শিক্ষিত কর্মশক্তি। আছে উদ্যোক্তা মানসিকতার লোকজন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের স্থানে পরিণত হতে পারে দেশটি। বিশেষ করে যেসব বিনিয়োগকারী চীনের বাইরে তাদের কারখানা সরানোর কথা ভাবছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় বড় কোম্পানি তাদের ব্যবসার অংশবিশেষ বা সরবরাহ চেইন সরিয়ে নিয়েছে ভিয়েতনামে। এর মধ্যে আছে জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ডেল, গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যাপল। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের বাজারের প্রতিশ্রুতির কথাও বিবেচনায় নিয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী চেইন, ইলেকট্রনিক খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে ভিয়েতনামকে সাহায্য করতে উদগ্রীব যুক্তরাষ্ট্র। বেইজিংয়ের অর্থনীতি যেহেতু ধীর গতির হয়েছে, তাই ওয়াশিংটনের সঙ্গে হ্যানয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আশাপ্রদ মনে হতে পারে।

সেলেক্স মোটরসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহপ্রতিষ্ঠাতা নগুয়েন হুউ ফুওক বলেন, সাত বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। আমি আমেরিকানদের স্বপ্ন সম্পর্কে জানি। এ সুযোগ আমি পেয়েছি। আমি জানি আমারও একটি বড় স্বপ্ন আছে। তা হলো ভিয়েতনামের স্বপ্ন।


সূত্র : বিবিসি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: