অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দিয়েছে।
জাপানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর পরই ২৩ জুলাই, রোববার এ ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
এতে বলা হয়, কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচন ‘ফ্রি ও ফেয়ার’ কোনোটাই হয়নি। এমনকি নির্বাচন শুরুর আগ থেকেই ক্ষমতাসীনরা সরকারবিরোধী দল, মিডিয়া ও সিভিল সোসাইটিসহ সংবিধানকে অবজ্ঞা করে আসছিল। আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচনের ধারে কাছেও যায়নি এ নির্বাচন। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করছে।
সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারি দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এখনো সময় আছে তারা আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে। তারা পুনরুদ্ধার করতে পারে বহুদলীয় গণতন্ত্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা বন্ধ করতে হবে। মিডিয়াকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কোনোভাবেই তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
এর আগে গতকাল ২৩,রোববার জুলাই কম্বোডিয়ায় একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। জেলজুলুম ও মামলা দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রাখা হয়েছিল। স্বাভাবিক কারণেই নির্বাচনে আবারও জয়ী হয়েছে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)।
টানা ৩৮ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি শাসন করছেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের স্বৈরশাসক’ প্রধানমন্ত্রী ৭০ বছর বয়সি হুন সেন।
এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এই নামমাত্র ‘গণতান্ত্রিক’ শাসক ১৯৮৫ সাল থেকে তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছেন তিনি। এমনকি দেশের আদালতকেও ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ গোয়েন্দা গোষ্ঠীকে রেখেছেন হাতের মুঠোয়। সংসদ-সদস্যদের তাদের পদমর্যাদা থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ নেতাদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্রেফতার করেছেন। পাঠিয়েছেন নির্বাসনে।
রোববারের নির্বাচনে হুন সেনের সিপিপি জিতেছে ১২০টি আসনে। আর তার অনুগত বিরোধী দল ফানসিনপেক পার্টি পেয়েছে ৫টি আসন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: