ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) আরও দুই বিচারকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন। নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকির এক সপ্তাহের মাথায় এই পদক্ষেপ নিলো প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ওপর ‘হস্তক্ষেপকারী’ হিসেবে দেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। আইসিসির একাধিক বিচারক ও আইনজীবীর ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। সবশেষ গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয় ওয়াশিংটন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানায়, আইসিসি যদি গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত বাতিল এবং আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে পুরনো তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করার যুক্তরাষ্ট্রের দাবি না মানে, তাহলে আরও আইসিসি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে।
হুমকির কয়েকদিনের মাথায় আইসিসির দুই বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া দুই বিচারক হলেন জর্জিয়ার গোচা লর্ডকিপানিডজে এবং মঙ্গোলিয়ার এরডেনেবালসুরেন দামদিন। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, ‘বিচারকরা ইসরাইলের সম্মতি ছাড়াই আইসিসির তদন্ত, গ্রেফতার, আটক বা বিচার প্রচেষ্টায় সরাসরি জড়িত।’
যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের প্রধান মিত্র। গাজায় গণহত্যাকে সমর্থন করে ইসরাইলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। রুবিও বিবৃতিতে বলেন, ‘আইসিসি ইসরাইলকে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা অব্যাহত রেখেছে, যা সবার জন্য একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করেছে।’
দখলদার ইসরাইলকে সমর্থন দেয়ার অংশ হিসেবে নেদারল্যান্ডসের হেগভিত্তিক এ আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলো ট্রাম্প প্রশাসন। এ আদালত গত বছরের নভেম্বরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এরপর থেকেই আইসিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে তদন্তকে ব্যাহত করতে পারে এবং প্রসিকিউটর, বিচারক এমনকি সাক্ষীদের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থার’ জন্য হুমকিস্বরূপ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: