ফাইল ছবি
নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি ম্যানহাটনের প্রাসাদে থাকবেন। ১৭৯৯ সালে নির্মিত হয় এই প্রসাদের নাম, ‘গ্রেসি ম্যানশন’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বেশির ভাগ নিউইয়র্ক সিটির মেয়রদের বাসস্থান ছিল প্রাসাদটি। মামদানি ছেড়ে যাচ্ছেন ওই ভাড়ার অ্যাপার্টমেন্টটি, যেটি তার নির্বাচনী প্রচার অভিযানের সময় তীব্র বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছিল।
প্রচারণায় মামদানির মূল প্রতিশ্রুতি ছিল—ভাড়া না বাড়ানো। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেছিলেন তার নিজের আবাসন পরিস্থিতিকে। কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা, বিশেষ করে নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো সমালোচনা করে বলেছিলেন, সেটা ছিল এক অ্যাপার্টমেন্ট দখল করে রাখার জন্য। যদিও মামদানি একটি বিখ্যাত পরিবারের সন্তান।
তার মা চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং বাবা মাহমুদ মামদানি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
এদিকে গতকাল সোমবার (৮ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে মামদানি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত মূলত আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং নিউইয়র্কবাসী যে সাশ্রয়ী আবাসনের এজেন্ডায় ভোট দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে আমার সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।’
৩৪ বছর বয়সী মামদানি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক বোটানিক্যাল গার্ডেনের ট্রেন শোতে গিয়ে আমাদের নতুন বাড়ি দেখলাম। আমি এবং আমার স্ত্রী রামা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জানুয়ারিতে সেখানে উঠব।’
জোহরান মামদানি যখন ১ জানুয়ারি শপথের পর সেখানে উঠবেন, তখন তিনি তার ছোট অ্যাপার্টমেন্টের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে থাকবেন।
এই প্রাসাদ শহরের প্রধান মেয়রের ঐতিহ্যবাহী বাসস্থান এবং ইস্ট নদীর ধারে অবস্থিত। দেখার মতো একটি সুন্দর প্রাসাদ গ্রেসি ম্যানশন, যার রং মাখনের মতো হলুদ, জানালাগুলো সবুজ ও রেলিংয়ের রং সাদা।
জানা গেছে, পাঁচটি শয়নকক্ষের এই গ্রেসি ম্যানশন মেয়র এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, গ্রেসি ম্যানশনে অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটে।
সাবেক মেয়র বিল ডি ব্লাসিওর স্ত্রী চিরলেন ম্যাকক্রে সাংবাদিকদের বলেছেন, দরজা মাঝে মাঝে নিজে নিজেই খোলে এবং বন্ধ হয়ে যায়। মেঝের বোর্ডগুলো ভয়ংকরভাবে শব্দ করে। বিদায়ি মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, ‘কে কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’ তিনি ২০২২ সালে ঘোষণা করেছিলেন, ‘ওখানে ভূত আছে।’
মামদানি কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় থাকতেন। মধ্যবিত্ত পরিবারসমৃদ্ধ এই এলাকা অভিবাসী কমিউনিটি এবং বৈচিত্র্যময় বৈশ্বিক খাবারের জন্য বিখ্যাত। বিবৃতিতে মামদানি আরো বলেন, ‘অ্যাস্টোরিয়া : আমাদের নিউইয়র্ক সিটির সেরা রূপটি দেখানোর জন্য ধন্যবাদ। যদিও আমি আর অ্যাস্টোরিয়ায় থাকব না, অ্যাস্টোরিয়া সব সময় আমার ভেতরে এবং আমার কাজের মধ্যে বেঁচে থাকবে।’
মামদানির বর্তমান অ্যাপার্টমেন্টটি ভাড়ার। অর্থাৎ শহর প্রতিবছর বাড়িওয়ালারা কতটা ভাড়া বাড়াতে পারবেন তার সীমা নির্ধারণ করে। নিউইয়র্কবাসীরা এসব অ্যাপার্টমেন্টকে জীবনের লাইফলাইন মনে করেন, কারণ আবাসন খরচ অনেকের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।
রেকর্ডে দেখা গেছে, নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি তার বর্তমান অ্যাপার্টমেন্টের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার ৩০০ ডলার প্রদান করেন। রিয়েল এস্টেট প্ল্যাটফর্ম জিলোর তথ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্ক সিটিতে একটি শোবার ঘরের অ্যাপার্টমেন্টের গড় ভাড়া প্রতি মাসে ৩ হাজার ৫০০ ডলার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: