পাকিস্তানের দুই ব্লগার শিশু আয় দিয়ে দুর্গম এলাকায় গড়ল আধুনিক স্কুল

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:১০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

প্রতিকুলতাকে সঙ্গী করেই তাদের বেড়ে ওঠা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসের গল্প বলে সমাজমাধ্যমে সাড়া ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানের দুই শিশু ব্লগার মোহাম্মদ সিরাজ ও তার বোন মুসকান।

পাকিস্তানের গিলগিত-বালতিস্তান প্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে তাদের ভিডিও এখন গোটা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু এই খ্যাতি আর রোজগার কেবল নিজেদের বিলাসের জন্য নয়, বরং তা কাজে লাগিয়ে তারা এক অসাধারণ কাজ করেছে। তাদেরই চেষ্টায় গ্রামের জরাজীর্ণ স্কুলটি এখন পরিণত হয়েছে একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

একসময় যেখানে খোলা আকাশের নিচে, ভাঙা মেঝেতে পড়াশোনা করত শিশুরা, তাদের কারও পায়ে জুতো ছিল না, কারও ছিল না ইউনিফর্ম—সেই করুণ চিত্র এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। এই পরিবর্তন এসেছে মূলত সিরাজ ও মুসকানের রোজগারের টাকায় এবং তাদের এই মহৎ কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে এসেছেন আরও অনেকে।

মোহাম্মদ সিরাজের বাবা মোহাম্মদ তাকি এক ভিডিও মেসেজে জানান, তার কাছে উন্নত জীবনযাপনের জন্য ইসলামাবাদে চলে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি নিজের গ্রামেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ তিনি চেয়েছেন নিজের গ্রামের উন্নতি করতে। শুরুর দিকে এই স্কুল গড়ার কাজ শুরু হয় সিরাজের আয়ের অর্থ দিয়ে। কিন্তু তাদের এই উদ্যোগ দেখে এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন হৃদয়বান মানুষ।

তাকি বলেন, স্কুলটিকে আধুনিক রূপ দেওয়ার মূল কৃতিত্ব তাদেরই। প্রায় দেড় বছরের নিরলস পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে আধুনিক ‘জাকি একাডেমি’। এখন এই স্কুলে আছে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা, একটি সুসজ্জিত ক্যানটিন, কম্পিউটার ল্যাব, খেলাধুলার মাঠ এবং শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ।

শিশু ব্লগার সিরাজ তার এক ভিডিওতে এই সাফল্যের পেছনে থাকা ভাবনাটি তুলে ধরেছে। সিরাজ ও মুসকানের এই গল্প প্রমাণ করে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেবল বিনোদনের উৎস নয়, বরং সমাজের কল্যাণেও এক শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: