বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করবে সৌদি আরব

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৫০

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলারের ঋণ আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার। বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো তেমন স্থিতিশীল হয়নি যে এই পরিমাণ ঋণ শোধ করতে পারবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব সিরিয়ার এই ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠন ও বিপর্যস্ত সরকারি খাতকে সহায়তার জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের অনুদানের পথ প্রশস্ত করবে। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সৌদি আরবের এই পরিকল্পনার কথা আগে প্রকাশিত হয়নি।

গত ডিসেম্বরে আসাদ সরকারকে উৎখাতের পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হন আহমেদ আল-শারা। এরপর তিনি একটি অন্তর্বর্তী সংবিধানে স্বাক্ষর করেন। তবে এত কিছুর পর এবারই প্রথম সৌদি আরব সিরিয়াকে অর্থায়ন করছে বলে জানা গেছে। এর আগে সৌদি আরবকে এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

অনেকে বলছেন, সৌদি আরবের এই পরিকল্পনা সিরিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সমর্থনের ইঙ্গিত। এর আগে দোহার একটি তহবিল মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অনিশ্চয়তার কারণে আটকে গিয়েছিল। কিন্তু গত মাসে কাতার জর্ডানের মাধ্যমে সিরিয়াকে গ্যাস সরবরাহের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এতে সিরিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখানে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, কাতারের এই পদক্ষেপে ওয়াশিংটনের অনুমোদন রয়েছে।

সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা অনুমানভিত্তিক বিষয়ে মন্তব্য করি না, তবে বিষয়টি দাপ্তরিক হলে ঘোষণা করা হবে।’ তবে সৌদি সরকারের মিডিয়া অফিস, বিশ্বব্যাংকের একজন মুখপাত্র ও সিরিয়ার সরকারের একজন কর্মকর্তার কাছে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধ করলে তারা কোনো সাড়া দেয়নি।

বিশ্বব্যাংকের কাছে সিরিয়ার প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান পেতে চাইলে সিরিয়াকে আগে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে দামেস্কের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব রয়েছে। অন্যদিকে বিদেশে জব্দ থাকা সম্পদ ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

এ ছাড়া ভিন্ন দুটি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা দেশটির পাওয়ার (বিদ্যুৎ গ্রিড) পুনর্গঠনেও সহায়তা করবে। বহু বছরের যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিরিয়ার বিদ্যুৎ খাত। এ ছাড়া দেশটির বিভিন্ন সরকারি খাতের বেতন-ভাতা প্রদানে সহায়তার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

গত শনিবার রয়টার্স জানিয়েছে, সিরিয়া চলতি মাসের শেষের দিকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বসন্তকালীন সভায় যোগদানের জন্য ওয়াশিংটনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। আসাদের উৎখাতের পর থেকে সিরিয়ার কর্মকর্তাদের এটিই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

তবে সিরিয়ার প্রতিনিধিদল কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, আসাদের শাসনামলে আরোপিত কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। যদিও গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়াতে মানবিক সহায়তার জন্য কিছু নিষেধাজ্ঞা ছয় মাস স্থগিত করেছিল, কিন্তু এতে সিরিয়া খুব একটা সহায়তা পায়নি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: