চলমান ‘অশুভ’ বিক্ষোভ তুরস্কের শান্তির অন্তরায় : এরদোগান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৬ মার্চ ২০২৫ ০৬:০০

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

তুরস্কে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ‘সহিংস আন্দোলনে’ উস্কানি দেয়ার অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। দেশটিতে সোমবার টানা ষষ্ঠ রাতের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত সপ্তাহের বুধবার এ বিক্ষোভের সূচনা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ছোঁড়ায় রোববার রাত থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ফলত সোমবার বিক্ষোভে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়।

ইমামোগলুকে তার মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগানের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও তার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন এরদোগান।

সোমবার রাতে ইস্তাম্বুলের সিটি হলের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের বিশাল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তুরস্কের জাতীয় পতাকা হাতে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ সমাবেশের কাছে জলকামান দেখা গেছে। তবে বিক্ষোভে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকায় পরিস্থিতি রোববারের মতো উত্তপ্ত হয়নি। সরকার প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী সোমবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত এক হাজার ১৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে চলমান বিক্ষোভকে ‘অশুভ’ বলে অভিহিত করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। উস্কানি দিয়ে নাগরিকদের শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দোশারোপও করেন তিনি। রাজধানী আঙ্কারা থেকে দেয়া ওই ভাষণের মাধ্যমে বিক্ষোভ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, অভিযোগের বিষয়ে কোনো জবাব না দিয়ে বিরোধী দলগুলো বরং পাঁচ দিন ধরে রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য এবং আইনবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।

ইমামোগলুর রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ওজগুর ওজেল সোমবার রাতে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার সময় বলেন, এই বিক্ষোভ ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ একটি অবাধ্য করণীয়। মঙ্গলবার সিলিভ্রির কারাগারে ইমামোগলুর সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন তিনি। ইমামোগলুর বিচার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল টিআরটিতে সরাসরি সম্প্রচারের অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানিয়েছে সিএইচপি’র নেতা ওজগুর।

উল্লেখ্য, ইমামোগলুর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে তুরস্কে এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তার দল বলছে, প্রায় দেড় কোটি ভোটার আছে ইমামোগলুর। ২০২৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিরোধী দলের তারকা রাজনীতিক। তার নির্বাচিত হয়ে আসার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু তাকে দমিয়ে রাখতেই প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিচারবিভাগকে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ সিএইচপি’র।

গত বুধবার তাকে আটক করা হলেও এ সপ্তাহের রোববার তাকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এখন তিনি কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে তাকে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরও থাকতে হতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: