
এবার মধ্যপ্রাচ্যসহ সউদী আরবে একটি বিরল দিন আসছে, যা প্রতি ৩৩ বছর পর একবার ঘটে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমাদানের চাঁদ দেখা গেলে, পরেরদিন ১ মার্চ প্রথম রোজা পালন করা হবে। এটি বিশেষ কারণ চন্দ্র এবং সৌর মাস একসাথে শুরু হবে, যা মুসলিম বিশ্বে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের রমাদান মাস একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। অর্থাৎ এবারের রমাদান মাস যদি ১ মার্চ থেকে শুরু হয় তবে চন্দ্র ও সৌর মাস একসঙ্গে শুরু হওয়ার “বিরল” দিন প্রত্যক্ষ করবে মুসলিম বিশ্ব। যেটি প্রতি ৩৩ বছর পর পর মাত্র একবার ঘটে।
আসলে, এবারের রমাদান মাসের প্রথম দিন আরবি বর্ষপঞ্জিকা এবং ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার একসাথে শুরু হবে। এর মানে হলো, রমাদান মাস শুরু হবে একই দিনে এবং মার্চ মাসের প্রথম দিনও হবে একসাথে। এটি সৌর এবং চন্দ্র পঞ্জিকার একসাথে মিলনের কারণে ঘটছে। সৌর পঞ্জিকা সূর্যের চারপাশে পৃথিবী ঘুরে দিনের হিসাব করে, যা লিপ ইয়ারে ৩৬৬ দিন হয়, আর সাধারণ বছরে ৩৬৫ দিন হয়। অন্যদিকে, চন্দ্র পঞ্জিকা চাঁদের পর্যায় অনুযায়ী নির্ধারিত হয়, তাই প্রতি বছর রমাদান মাস আলাদা আলাদা দিনে শুরু হয়।
এখন ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমাদান মাসের চাঁদ দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ১ মার্চ থেকে প্রথম রোজা শুরু হবে। সেই রাতেই পড়বে প্রথম তারাবির নামাজ। যদিও বেশিরভাগ দেশ এখনো খালি চোখে চাঁদ দেখেই রমজান মাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু কিরগিজস্তান ও কাজাখস্তানসহ কিছু দেশ জ্যোতির্বিদ্যার হিসাব অনুযায়ী আগেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা ১ মার্চ প্রথম রোজা পালন করবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইব্রাহিম আল জারওয়ান বলেছেন, “ধারণা করছি, ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার নতুন চাঁদের জন্ম হবে এবং সে অনুযায়ী ১ মার্চ শনিবার রমাদানের প্রথম দিন হবে।”
এবারের এই বিরল দিনটি মুসলিম বিশ্বে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু চন্দ্র ও সৌর পঞ্জিকার একসাথে শুরু হওয়ার দৃষ্টান্ত নয়, বরং এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং পবিত্র রমাদান মাসের সুরক্ষা ও গুরুত্ব অনুভব করবেন। এটি সৌদি আরবসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।
এই বিরল ঘটনা মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি স্মরণীয় দিনের পরিণতি হতে যাচ্ছে। ৩৩ বছর পর এসে এই দিনটি যেমন সকলের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তেমনি এটি আগামী প্রজন্মের জন্যও একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।
হিজরি বর্ষপঞ্জির নবম মাস পবিত্র রমাদান। চাঁদের ওপর নির্ভর করে হিজরি মাস গণনা করা হয়। যদি চাঁদ এক দিন আগে দেখা যায়, তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকেও শুরু হতে পারে পবিত্র মাহে রমাদান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: