বন্দিদশায় অনশনে ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনির মৃত্যু

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩ মে ২০২৩ ০৪:৫৫

ফিলিস্তিনি সংগঠন ইসলামিক জিহাদের জ্যেষ্ঠ সদস্য খাদের আদনান ফিলিস্তিনি সংগঠন ইসলামিক জিহাদের জ্যেষ্ঠ সদস্য খাদের আদনান

ইসরায়েলে কারাগারে অনশনরত অবস্থায় ফিলিস্তিনের সংগঠন ইসলামিক জিহাদের জ্যেষ্ঠ সদস্য খাদের আদনানের মৃত্যু হয়েছে। তিনি প্রায় তিন মাস ধরে অনশন করছিলেন। ২ মে মঙ্গলবার তিনি মারা যান।

এর আগে তথাকথিত প্রশাসনিক আটকাদেশের অধীনে ২০১৫ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার হয়েছিল। এর প্রতিবাদে তিনি সে সময় ৫৫ দিন অনশন করেছিলেন। এই আইনে সন্দেহভাজন কাউকে আটক করে বিনা বিচারে রাখা হয়।

আদনানের মৃত্যুতে ইসলামিক জিহাদ বলেছে, ইসরায়েলকে এই অপরাধের জন্য মূল্য দিতে হবে। গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্বাধীন বীর খাদের আদনান বিশ্বের সামনে শত্রুদের অপরাধের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন।’

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নির্বাহী কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল হুসেইন আল-শেইখ আদনানের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে ‘সম্পূর্ণ দায়ী’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আদনানকে ‘জোরপূর্বক আটক’ করা হয়েছে।

হুসেইন আল-শেখ টুইটারে পোস্টে লিখেছেন, ‘আদনানের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহকে তাঁকে জান্নাত দান করুক।’

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আদনানের মৃত্যুর ঘটনাকে ইসরায়েলের ‘জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলেছে, দখলদার কর্তৃপক্ষ যে জঘন্য অপরাধ করেছে, পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। তাদের হাতেই শেখ খাদের আদনান শহীদ হন।

ইসরায়েল আদনানে মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়ার কিছু সময় পরই গাজা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর অধিকৃত পশ্চিম তীরের শহর আরাবেহেতে নিজেদের বাড়ির বাইরে সংবাদ সম্মেলন করেন রান্ডা মুসা। তিনি, তাঁর স্বামীর মৃত্যুকে ‘গর্ব’-এর বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম, তিনি আজ আমাদের সঙ্গে থাকবেন,...কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর ভাগ্য ছিল, তিনি শহীদ হয়েছেন।’

‘এটি কোনো মৃত ব্যক্তির বাড়ি নয়, যাঁরা আমাদের অভিনন্দন জানাবেন, আমরা শুধু তাঁদেরই গ্রহণ করব।’ তিনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দ্বারা ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে দ্রুত স্বামীর লাশ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রামাল্লাহতে কমিশন ফর দ্য অ্যাফেয়ার্স অব প্রিজনার্স অ্যান্ড এক্স ডিটেইনিজের প্রধান কাদেরি আবু বকর বলেন, আদনানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের একটি ‘বার্তা দিতে’ চায় ইসরায়েল। বার্তাটি হলো এমন, তাঁরা যদি অনশন শুরু করেন, তাহলে তাঁদের ভাগ্যও এমন হবে।

কাদেরি আবু বকর বলেন, ‘যা হয়েছে, আমরা তা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করব। কারণ, এটি পুরোদমে অপরাধ। ইসরায়েল নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে বলে মনে করে। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো ইসরায়েলের অপরাধকে উপেক্ষা করে, তাই ইসরায়েল অপরাধ করেই চলেছে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: