২০২১ সালে আফগানিস্তানে পশ্চিমা–সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তালেবান। তখন চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে দেশটি থেকে বিদেশি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে কোনো দেশই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে রাশিয়া ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। গত জুলাইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে তালেবানকে মিত্র বলে উল্লেখ করেছিলেন।
আফগানিস্তান থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত তৎপর বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মনে করে রাশিয়া। ৮ ডিসেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে হায়াত তাহরির আল-শামসহ (এইচটিএস) কয়েকটি গোষ্ঠী। সিরিয়ায় প্রায় এক দশক ধরে বাশারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছিল মস্কো।
এর আগে গত মার্চে মস্কোয় একটি কনসার্টের আয়োজনে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৪৫ জন নিহত হন। ওই হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তখন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের হাতে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে ওই হামলার পেছনে আইএসের আফগান শাখা জড়িত ছিল। তালেবান বলেছে, আফগানিস্তান থেকে আইএস নির্মূলে কাজ করছে তারা।
পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিসরে স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে তালেবানের সামনে বাধা নারীদের অধিকার নিয়ে তাদের অবস্থান। আফগানিস্তানে মেয়েশিশু ও নারীদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পুরুষ অভিভাবক ছাড়া তাঁদের ঘরের বাইরে চলাফেরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আফগানিস্তানে রাশিয়ারও রক্তক্ষয়ী ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে দেশটিতে হামলা চালায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাবাহিনী। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পাওয়া মুজাহিদিন যোদ্ধাদের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই হয় তাদের। পরে ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেন। তত দিনে আফগান যুদ্ধে প্রায় ১৫ হাজার সোভিয়েত সেনার মৃত্যু হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: