২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নির্বাচনে পাঁচজন মুসলিম নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। যার মধ্যে আন্দ্রে কারসন, ইলহান ওমর রাশিদা তালিব, সালমান ভোজানি ও সুলেমান লালানি পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে মুসলিম প্রতিনিধিত্বের মুসলিম প্রভাব জানান দেয় এর মাধ্যমেই।
আন্দ্রে কারসন : ইন্ডিয়ানার ৭ম জেলা থেকে নির্বাচিত আন্দ্রে কারসনও পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন, যিনি ৬৮.২% ভোট পেয়েছেন। ২০০৮ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কারসন বৈচিত্র্য, ধর্মীয় সহনশীলতা ও সমাজকেন্দ্রিক আইন প্রণয়নের সমর্থক হিসেবে কাজ করছেন। তার পুনঃনির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার অবস্থানকে আরও সুসংহত করেছে।
সালমান ভোজানি : সালমান ভোজানি প্রথমবারের মতো টেক্সাসের আইনসভায় ২০২২ সালে নির্বাচিত হন। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা উন্নয়ন ও শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তার পুনঃনির্বাচন টেক্সাসের দ্রুত পরিবর্তনশীল জনগোষ্ঠীর বাস্তব প্রতিফলনকে ইঙ্গিত করে।
সুলেমান লালানি : টেক্সাসের রাজ্য আইনসভায় ৫৬.১% ভোট পেয়ে সুলেমান লালানি পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্যসেবা এবং ইমিগ্রান্ট অধিকার সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। টেক্সাসের জনগণ পরিবর্তনশীল জনসংখ্যার মাঝে লালানির মতো প্রতিনিধিদের দেখতে চায়, যারা প্রকৃত অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে।
ইলহান ওমর : মিনেসোটার ৫ম জেলা থেকে সোমালি-আমেরিকান ইলহান ওমর তৃতীয়বারের মতো কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছেন, যেখানে তিনি ৭৫.২% ভোট পেয়েছেন। একজন প্রাক্তন শরণার্থী এবং প্রগতিশীল নীতির প্রবক্তা ওমর আমেরিকান বৈদেশিক নীতির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে আসছেন। বিশেষত গাজা এবং সামরিক সহায়তার বিষয়ে তার কাজের প্রশংসা বিশ্বজুড়ে। তার বিজয় বিভিন্ন ইমিগ্রান্ট ও শরণার্থী সম্প্রদায়ের জন্য তার দৃঢ় অবস্থানের প্রতিফলন বলেই মনে করা হয়।
রাশিদা তালিব : মিশিগানের ১৩তম জেলা থেকে রাশিদা তালিব পুনরায় চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। যেখানে তিনি ৭০% ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য এবং কংগ্রেসে নির্বাচিত প্রথম ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নারী হিসেবে পরিচিত তালিব যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল নীতির অন্যতম প্রকাশ্য সমালোচক। তার পুনঃনির্বাচন প্রমাণ করে যে ডিয়ারবর্নের আরব-আমেরিকান সম্প্রদায় তাকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করে, যারা তার আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ নীতি-প্রবণতার সাথে সংহতি প্রকাশ করে।
এ সফল পুনঃনির্বাচনগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি ক্রমবর্ধমান স্বীকৃতি আর মূল্যায়নের প্রতীক। মুসলিম প্রার্থীরা তাদের কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন, যদিও তাদের অনেকেরই বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানি-আমেরিকান রিপাবলিকান প্রার্থী অ্যারন বাশির পেনসিলভানিয়ায় সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: