আঞ্চলিক বহু ইস্যুতে মতভেদ রয়েছে সৌদি আরব ও তুরস্কের। তবে দুই দেশ স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে অনড়। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বছরের পর বছর, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের আওয়াজ তুলে যাচ্ছে রিয়াদ ও আঙ্কারা। এই ইস্যুই দুই দেশের সম্পর্কের সীমারেখা তৈরি করে দিয়েছে।
তবে মাঝে রিয়াদ-আঙ্কারার সম্পর্কে ভাটা পড়ে। কিন্তু এখন আবার ভাঙা সম্পর্ক জোড়ায় মনোযোগী হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
গেল কয়েক দশক ধরে মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। এই ইস্যু যে দেশ সমাধান করতে পারবে, সে দেশই মুসলিম বিশ্বের নেতা হয়ে উঠবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই ফিলিস্তিন নিয়ে সৌদি আরব ও তুরস্কের আগ্রহের কমতি নেই।
এই ইস্যুতে মিসর ও ইরানও নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চলমান গাজা যুদ্ধে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাদ দিয়ে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে সমাধানে এক হচ্ছে, এই দেশগুলো।
তুরস্কের জনগণের সমর্থন আদায়ে এরদোয়ান নিজেকে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের ইসলামিক স্থাপনার রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করে যাচ্ছেন। এজন্য পশ্চিমাবিরোধী অবস্থান নিয়ে ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের সহায়তাও দিয়েছে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু নিজের দেশেই সমস্যা এরদোয়ানকে ব্যস্ত রেখেছে, তাই ফিলিস্তিন ইস্যুতে সেইভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না তুরস্ক।
সৌদি আরবও ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিজের অবস্থান নিয়ে অনড়। এখন নিজ নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জোরালো হচ্ছে রিয়াদ ও আঙ্কারা।
দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্ক আরও জোরদারে রোববার রাষ্ট্রীয় সফরে তুরস্ক পৌঁছেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। তুরস্কে পৌঁছানোর পর ইস্তাম্বুলের দোলমাবাচে প্রাসাদে প্রিন্স ফয়সালকে স্বাগত জানান এরদোয়ান। সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, উভয় নেতা সৌদি-তুরস্কের সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর আগে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রিন্স ফয়সাল।
মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইস্যুতে তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে মতপার্থক্য দুই দেশকে দূলে ঠেলে দেয়। ২০১৮ সালে সৌদির ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর রিয়াদ-আঙ্কারার সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে।
তবে ২০২২ সালে এরদোয়ানের সৌদি সফর এবং একই বছর যুবরাজ মোহাম্মদের আঙ্কারা সফরে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে দুই দেশের সম্পর্ক। এখন ফিলিস্তিন ইস্যুতেও জোটবদ্ধ হচ্ছে দুই দেশ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: