সৌদি আরবে তীব্র গরমে এক হাজারের বেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

মুনা নিউজডেস্ক | ২২ জুন ২০২৪ ০০:২২

ছবি: সংগৃহীত ছবি: সংগৃহীত


সৌদি আরবে তীব্র গরমে এ বছর হজযাত্রীদের মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক হাজার। এই সংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি হজযাত্রী নিবন্ধিত ছিলেন না বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রা প্রায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।


গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে আরও ৫৮ জন মিসরীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে এক আরব কূটনীতিক জানিয়েছেন, তীব্র গরমে এ বছরে হজে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৬৫৮ জন মিসরীয়র মধ্যে ৬৩০ জনই হজের জন্য নিবন্ধিত ছিলেন না।


এ বছর ১ হাজার ৮১ জন হজযাত্রীর মৃত্যুর কথা জানিয়েছে প্রায় ১০টি দেশ।


হজের সময় নির্ধারিত হয় ইসলামিক চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসারে। সে হিসেবে এ বছরও হজ পড়েছিল সৌদি আরবের গ্রীষ্মে, যখন দেশটিতে থাকে ভয়াবহ গরম। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র এই সপ্তাহে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।

গত মাসে প্রকাশিত সৌদি সমীক্ষায় বলা হয়েছিল যে, প্রতি দশকে অঞ্চলটিতে তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মক্কা থেকে এ মাসে কয়েক লাখ অনিবন্ধিত হজযাত্রীকে বের করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে গত শুক্রবার শুরু হওয়া হজের প্রধান আনুষ্ঠানিকতায় আরও অনেক অনিবন্ধিত হজযাত্রী অংশ নিয়েছিলেন বলেই এখন দেখা যাচ্ছে।

অসহনীয় গরমে এই অনিবন্ধিত হজযাত্রীদের অবস্থাই ছিল সবচেয়ে করুণ। কারণ, প্রায় ১৮ লাখ নিবন্ধিত হজযাত্রীর জন্য কর্তৃপক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গাগুলোতে প্রবেশ করতে পারেননি এই তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক আরব কূটনীতিক বলেন, আরাফাত দিবসের আগে নিরাপত্তা বাহিনী তাড়া করার পর অনিবন্ধিত হজযাত্রীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। প্রচণ্ড গরমে তারা নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, মিসরীয় হজযাত্রীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল উচ্চ তাপমাত্রা—যা উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য অনেক শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করে।

পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়াও গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের দেশের আরও হজযাত্রীদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একজন কূটনীতিক বলেছেন, পাকিস্তানের প্রায় দেড় লাখ তীর্থযাত্রীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আবহাওয়ার বিবেচনায় মৃতের সংখ্যা স্বাভাবিক।’

ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার নাগরিক এ বছর হজে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১৮৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে। দেশটির ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছর হজে মারা গিয়েছিলেন ৩১৩ জন ইন্দোনেশীয়।

মালয়েশিয়া, ভারত, জর্ডান, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, সুদান এবং ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলও হজে তাদের নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ কারণ উল্লেখ করেনি।

এদিকে, নিখোঁজ হজযাত্রীদের খোঁজ করছেন তাদের বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়রা। হাসপাতাল ঘুরে এবং অনলাইনে তাদের স্বজনদের সন্ধানের আবেদন করে তারা সবচেয়ে খারাপ খবরের আশঙ্কাই করছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: