বাধা পেরিয়ে আল-আকসায় ঈদের জামাতে ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি

মুনা নিউজডেস্ক | ১৬ জুন ২০২৪ ২২:১৮

ছবি: সংগৃহীত ছবি: সংগৃহীত


প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি রবিবার অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে। তবে সেখানে কোনো উৎসবের আমেজ ছিল না। পরিবর্তে গাজা উপত্যকায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের শিকারদের জন্য শোক দেখা গেছে মুসল্লিদের মাঝে। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।


জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে। তবে কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে হাজারো মুসল্লিকে আল-আকসায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলেছে, ‘(ইসরায়েলি) দখলদার বাহিনী রবিবার সকালে আল-আকসা মসজিদে যাওয়ার পথে এবং সেখান থেকে বের হওয়ার সময় মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় এবং অনেককে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য প্রবেশ করতে বাধা দেয়।’
ফিলিস্তিনিরা ১৬জুন আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করছে।
ওয়াফা আরো বলেছে, ‘সকাল বেলাজ দখলদার বাহিনী আল-আকসা মসজিদের আঙিনায় প্রবেশ করে, মুসল্লিদের পরিচয় যাচাই করে, তাদের চলাচলে বাধা দেয়, অনেক যুবককে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং মসজিদের দরজার বাইরে নামাজ পড়তে বাধ্য করে।’
এদিকে মুসল্লিদের প্রবেশে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরোপিত নিরাপত্তা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অধিকৃত পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদে হাজারো ফিলিস্তিনি এদিন ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে।
হেবরনের ওয়াকফ বিভাগের প্রধান ঘাসন আল-রাজাবি আনাদোলুকে বলেন, ‘ঈদুল আজহায় দখলদারিত্বের পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো পবিত্র স্থানগুলোতে, বিশেষ করে ইব্রাহিমি মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ রোধ করা। এসব ব্যবস্থা সত্ত্বেও আট থেকে ১০ হাজার ফিলিস্তিনি ঈদুল আজহার নামাজ মসজিদে আদায় করেছে।
আনাদোলু সংবাদদাতার মতে, ইব্রাহিমি মসজিদে প্রবেশ করতে এবং সেখানে প্রার্থনা করতে মুসল্লিদের অবশ্যই সামরিক চেকপয়েন্ট এবং তারপর ইলেকট্রনিক গেট দিয়ে যেতে হয়েছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো সত্ত্বেও ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি ক্রমাগত নৃশংস আক্রমণের মধ্যে গাজা উপত্যকায় এ বছরের ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গাজায় ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। পাশাপাশি ৮৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের অভাবের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ রায়ে তেল আবিবকে অবিলম্বে রাফাতে সামরিক কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৬ মে শহরটিতে আক্রমণের ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি যুদ্ধ থেকে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: