সাগরের বুকে ইসলামি স্থাপত্য জাদুঘর

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ মে ২০২৩ ১২:২৪

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

 

১৪০০ বছরের পুরোনো বিশ্বমানের সংগ্রহশালা ‘দি মিউজিয়াম অব ইসলামিক আর্ট’ তথা কাতারের দোহায় অবস্থিত ইসলামিক স্থাপত্য শিল্প জাদুঘর।

দোহা উপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা এ জাদুঘরের পাশে সার্বক্ষনিক খোলা থাকে ২ লাখ ৮০ হাজার বর্গমিটারের বিশাল পার্ক। যে পার্কে অনায়েসেই মানুষ ২৪ ঘণ্টা প্রবেশ করতে পারে। এ পার্কের নাম (MIA Park=The Museum of Islamic Art Park)। পার্কটি সার্বক্ষনিক উন্মুক্ত থাকলেও নির্ধারিত নিয়ম মেনেই খোলা হয় জাদুঘর।

জাদুঘরটিতে রয়েছে কফি হাউস, ক্যালিগ্রাফি সমৃদ্ধ গ্যালারি ও উপহারের দোকান। পাঁচ তলা বিশিষ্ট এ বিশাল জাদুঘরে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা ওজু ও নামাজের জন্য রয়েছে সর্বোত্তম ব্যবস্থা। আগত দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে ২০০ আসন বিশিষ্ট একটি থিয়েটার।

ভোজন বিলাসীদের জন্য আরবি, ফরাসি ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মজাদার খাবারে সমৃদ্ধ রেস্টুরেন্ট। মিউজিয়ামটিতে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে আর্থিক লেনদেনের জন্য এটিএম বুথ, যোগাযোগের জন্য ফ্রি ওয়াইফাই কানেকশন, ফ্রি গাইড লাইন এবং অভ্যর্থনা ও তথ্য অনুসন্ধান কেন্দ্র রয়েছে।

শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পে ভরপুর এ জাদুঘরে গবেষণা ও অধ্যয়নের জন্য রয়েছে বিশাল পাঠাগার। অনেক দুর্লব বইয়ের সংগ্রহও রয়েছে এ পাঠাগারে। দর্শণার্থীদের জন্য বন্ধের ৩০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত প্রবেশের অনুমতি রয়েছে জাদুঘরটিতে।

 

 

যে কারণে আকর্ষণীয় এ মিউজিয়াম

  • জাদুঘরের ৪র্থ তলায় সংরক্ষিত আছে দুর্লভ সংগ্রহ-
  • ইসলামের প্রাথমিক যুগের (সপ্তম থেকে ১২তম শতাব্দি) স্থাপত্য শিল্প গ্যালারি।
  • মধ্য এশিয়া ও ইরানের ১২-১৬তম শতাব্দির স্থাপত্য শিল্পের ২টি আলাদা গ্যালারি।
  • মিসর ও সিরিয়া ১২-১৫ তম শতাব্দির স্থাপত্য শিল্পের ২টি আলাদা গ্যালারি।
  • শুধু ইরানের ১৬-১৯ শতকের আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের আলাদা গ্যালারিও স্থান পেয়েছে এ জাদুঘরে।
  • ভারতের ১৬-১৮ শতাব্দির স্থাপত্য শিল্প গ্যালারি।
  • তুরস্কের ১৬-১৮ শতকের স্থাপত্য শিল্প গ্যালারিও রয়েছে এ জাদুঘরে।

কাতারের দোহা উপসাগরের তীরে গড়ে ওঠা এ ইসলামি স্থাপত্য শিল্প জাদুঘরের স্থপতি ৯১ বছর বয়সে আই.এম.পাই ৪৫ হাজার বর্গমিটারের বিশাল ভবনের নকশা করেন।
এ জাদুঘরের নকশা করার আগে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে প্রায় ৬ মাস ভ্রমণ করে বিভিন্ন জাদুঘর পরিদর্শন ও মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নেন।
কাতার সরকার কর্তৃক জাদুঘরের জন্য প্রস্তাবিত সম্ভাব্য সব স্থানকে অগ্রাহ্য করে দোহা উপসাগরের এ স্থানটিকে বেছে নেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এমন স্থানে জাদুঘরটি করা হোক যেখানে ভবিষ্যতে কোনো উঁচু স্থাপনা এ জাদুঘরটিকে ঢেকে না দেয়।

২০০৬ সালে কাতার ইসলামিক স্থাপত্য জাদুঘরের কাজ সমাপ্ত হলেও ২০০৮ সালের ২২ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আর তা সর্ব সাধারণের জন্য ৮ ডিসেম্বর ২০০৮ খুলে দেয়া হয়। ২০০৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সাবিহ আল খেমিরের পরিচালনায় বেশ কয়েকবার জাদুঘরের আভ্যন্তরীন নকশা পরিবর্তন করে তা সর্বোত্তম পরিদর্শনের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়।

অনন্য সুন্দর এ জাদুঘরের নির্মাণ কাজ করে উইলমোট অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। আলোক সজ্জায় কাজ করে আলো নকশাকারী প্রতিষ্ঠান আইসোমেট্রিক লাইটিং ডিজাইন ও পরিবেশ ও বনায়ন নকশা প্রতিষ্ঠান এভি কনসালটেন্ট। কাঠামোগত নকশায় কাজ করেন লেসলি এ রবার্টসন অ্যাসোসিয়েটস।

 

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: