শিক্ষা প্রাঙ্গণে হিজাব বিতর্কে উত্তাল ভারতের রাজস্থান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩১ জানুয়ারী ২০২৪ ১৩:১২

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

কেরলের পর এবার হিজাব নিয়ে উত্তাল গোটা ভারত। বিতর্ক চলছে রাজস্থানেও। শিক্ষা প্রাঙ্গনে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের জেরে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত ভারতের রাজ্য-রাজনীতি।

২৭ জানুয়ারি, শনিবার ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজস্থানের ওয়াল্লেদ শহরের গঙ্গাপোল এলাকায় একটি সরকারি স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যসভার বিজেপি বিধায়ক বালমুকুন্দ আচার্য। পরে ওই স্কুলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাথায় হিজাব দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বালমুকুন্দ। হিজাব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করারও অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ৩০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজাব নিয়ে বালমুকুন্দের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করে মুসলিম ছাত্রীরা। বিধায়ক জোর করে ধর্মীয় স্লোগান আওড়াতে বাধ্য করেছেন বলেও অভিযোগ করে তারা। এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ এক ছাত্রী বলে, ‘আমাদের জোর করে ধর্মীয় স্লোগান বলতে বাধ্য করা হয়। কেউ কেউ তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি জানান, সরকারের নির্দেশ রয়েছে। তিনি জানান, স্কুলে হিজাব পরে আসার অনুমতি নেই।’

এ অবস্থায় স্থানীয় পুলিশ বিষয়টি নিয়ে আশ্বস্ত করার পর বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় ছাত্রীরা।

এদিকে বিতর্কের মুখে নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন বালমুকুন্দ আচার্য। ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি স্কুলের প্রিন্সিপালকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, শিক্ষার্থীদের জন্য দুই রকমের পোশাক আছে কি না। এমনটা চলতে থাকলে তো মেয়েরা এবার লেহেঙ্গা-চুন্নিতেও স্কুলে চলে আসবে।’

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বালমুকুন্দ আচার্যের বিরুদ্ধে ওয়াল্লেদ শহরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেসের কৃষ্ণাপোলের বিধায়ক আমিন কাগজি। তিনি বলেন, ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিলে প্রতিবাদ চলতেই থাকবে।

এই ইস্যুতে মন্তব্য করেছেন বিজেপির মন্ত্রী কিরোরি লাল মীনা। তিনি বলেন, ‘হিজাব দাসত্বের প্রতীক। মুঘলদের সময় থেকে এই প্রথা চলে আসছে। কিছু ইসলামিক দেশেও হিজাব ব্যান করা হয়েছে। এখানে তো এসব চলবেই না।’

উল্লেখ্য, এর আগে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হিজাব ইস্যুতে সরগরম ছিল ভারতের কর্ণাটক রাজ্য। ২০২২ সালে কর্ণাটকের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করেছিল রাজ্যটির বিজেপি সরকার। বিষয়টি পরে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ে জানানো হয়—ইসলাম ধর্মে হিজাব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তবে তা পরার অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই। ২০২৩ সালে রাজ্যটিতে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে হিজাবের ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় এবং বলা হয়—নাগরিকেরা যা খুশি খেতে পারবেন, যা ইচ্ছে পোশাক পরতে পারবেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: