আসন্ন রমজানে খেজুরের পর্যাপ্ততা নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরাও

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৫ জানুয়ারী ২০২৪ ২০:০৯

প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি

সৌদি আরব থেকে চ্যারিটির পণ্য দেশে এনে বিক্রি করা যাবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির মতে, চ্যারিটি পণ্য হিসেবে পবিত্র জমজমের পানি আনা হয়। এটি এক ব্যক্তি এক বোতল আনতে পারেন। সেটা দেশে নানান চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা যাবে না। একই ভাবে বলা যাবে না যে, এটা সৌদি আরবে নবি (সা.) খেয়েছেন এই বাগানের খেজুর। আপনারা খেলেও সেফা পাবেন। এমনটা হলে প্রতারণা হিসেবে বিচারের আওতায় আনা হবে। ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে ব্যবসা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর ভোক্তা অধিদপ্তরে আয়োজিত ‘পবিত্র জমজমের পানি, রিয়াজুল জান্নাহ নামে জায়নামাজ, আতর, খেুজর ইত্যাদি পণ্য বিক্রয়কারী’ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মোহাম্মদ মোনওয়ার হোসেন, উপ-পরিচালক আতিয়া, সহকারী পরিচালক (ঢাকা বিভাগ) আব্দুল জব্বার মন্ডল, ক্যাবের ট্রেজারার ড. মনজুর ই খোদা, ট্যারিফ কমিশনের গবেষক আরিফুজ্জামান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ফ্রেস ফুড আমদানিকারক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তব্য দিতে গিয়ে সিরাজুল ইসলাম রমজানে খেজুর সরবরাহ করা নিয়ে নিজের শঙ্কার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আসন্ন রমজান মাসে ব্যবসায়ীরা ভালোভাবে খেজুর সরবরাহ করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আমাদের খেজুরে লাক্সারি পণ্যের মতো ট্যাক্স বসানো হয়েছে। গত বছরে এসময়ে আমি ২১ হাজার টন আমদানির জন্য এলসি খুলেছিলাম। এ বছর এখনো ৭ হাজার টন খেজুর আমদানির জন্যও এলসি করতে পারিনি। কারণ আমার পুরো পণ্যের জন্য অতিরিক্ত ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা বেশি লাগবে। কোথায় পাবো এত টাকা? আমরা খুব কম লাভে পাইকারের কাছে খেজুর সরবরাহ করে থাকি।

অনলাইনের প্রতারণা নিয়ে তিনি বলেন, আপনার খেজুর বিক্রি করেন, ব্যবসা করেন, সব ঠিক আছে। কিন্তু ব্র্যান্ড নকল করে করবেন না। আমার খেজুরের ১০ কেজির প্যাকেট বা ৫ কেজির প্যাকেট আনতে ভ্যাট-ট্যাক্স লাগে। আপনি খুলে ব্যবসা করবেন কিন্তু ভ্যাট-ট্যাক্স দেবেন না, এটা হতে পারে না। সৌদির একটা বাগানের কথা বা মদিনার কথা বলে খেজুর বিক্রি করেন, এটাও প্রতারণা। আপনি কীভাবে জানলেন এটা সেই বাগান থেকেই আনা হয়েছে?

ফকির মোহাম্মদ মোনওয়ার হোসেন বলেন, অনেক সময় সামাজিক মাধ্যমে পেইজ খুলে ব্যবসা করা হয় প্রতারণার করে। অনেকে সেখানে বলেন যে, এটা পবিত্র সৌদির অমুক বাগানের আজওয়া খেজুর, অলিভ ওয়েল। যেখান খেতে নবী-রাসুল (স.) খেয়েছেন, এটা খেলে অমুক উপকার ইত্যাদি। এটা করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে এ ধরনের ব্যবসা করা যাবে না।

তিনি বলেন, কেউ কেউ জমজমের পানি বিক্রি করছেন। তিনি কীভাবে নিয়ে এলেন? একজন ব্যক্তি একটি পানির পাত্র নিয়ে আসতে পারেন। এটা চ্যারিটি পণ্য, যেটা ওই ব্যক্তির ব্যবহারের জন্য। কীভাবে তাহলে বিক্রির এত পানি পাবেন? সৌদি থেকেও অনুমতি নাই, আমাদের এখানেও অনুমতি নাই। কীভাবে এগুলো করেন? এটা বন্ধ করতে হবে।

হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্যবসা ভালো, হালাল, জীবিকার অন্যতম উপায়। কিন্তু সেটাকে প্রতারণার পর্যায়ে নেওয়া যাবে না। এটাকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। আসন্ন রমজান মাসে আমরা ভালো করে ব্যবসা করতে চাই। কোনো ধরনের লোক ঠকানো, প্রতারণা থেকে আমরা বিরত থাকার চেষ্টা করবো। একই সঙ্গে খেজুরসহ যেসব পণ্যে অতিরিক্ত ট্র্যাক্স ধরা হয়েছে সেটাও বন্ধ করতে হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: