ভারতের উত্তর প্রদেশে প্রায় ২১ হাজার মাদরাসা শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন। উত্তর প্রদেশের যোগী সরকার সেখানকার মাদরাসাগুলোতে আধুনিকীকরণ প্রকল্পের অধীনে হিন্দি, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোর জন্য নিয়োগ করা শিক্ষকদের বেতন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৯৩-৯৪ সালে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। ২০০৮ সালে এটি শুরু হয়।
এ প্রকল্পের অধীনে এ পর্যন্ত ২১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে স্নাতক পাস শিক্ষকদের ৮ হাজার টাকা করে এবং স্নাতোকোত্তর পাস করা শিক্ষকদের প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হতো।
সম্প্রতি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে শত শত মাদরাসাকে সাধারণ স্কুলে রূপান্তর করা হয়। এর পরপরই উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। বিরোধী দল এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর প্রতিবাদ সত্ত্বেও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এ পদক্ষেপ নেন এবং রাজ্যজুড়ে মাদরাসার অর্থায়ন বন্ধ করার আহ্বান জানান।
উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ বলেছেন, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে ২১ হাজারের বেশি শিক্ষক তাদের চাকরি হারাবেন। অন্যদিকে মুসলিম ছাত্র ও শিক্ষকরা ৩০ বছর পিছিয়ে যাবে।
মাদরাসা শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ প্রধানমন্ত্রী মোদিকে লেখা চিঠিতে লেখেন, মাদরাসা আধুনিকীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের লাখ লাখ মাদরাসা ছাত্র, যাদের বেশিরভাগই অনগ্রসর শ্রেণির, শিক্ষা ও সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত করাই ছিল লক্ষ্য।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ১৪২ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ মুসলমান। উত্তর প্রদেশের মুসলমানদের হার আরও বেশি। সেখানে তারা মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ। কিন্তু বর্তমানের বিজেপি নেতৃত্বাধীন যোগী সরকার রাজ্যের মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হুমকি ও হয়রানি করেছে। রাজ্য সরকার অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: