গণবিয়ের মধ্যদিয়ে দাম্পত্য সম্পর্কে আবদ্ধ হলেন একশ’ আফগান তরুণ-তরুণী। খরচ কমাতে ২৫ ডিসেম্বর, সোমবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে এই গণবিয়ের আয়োজন করা হয়।
এএফপির প্রতিবেদন মতে, শহরের একটি ওয়েডিং হলে গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তবে অনুষ্ঠানে আগের মতো ততটা জাঁকজমক ছিল না। ছিল না গান-বাজনাও। তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এগুলো নিষিদ্ধ রয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, তবে যতটুকু না করলেই, ততটুকুই সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল। লাল-নীল ফিতে ও প্লাস্টিক ফুল দিয়ে সাজানো হয় গাড়িগুলো। ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি আর পোশাক পরে অর্ধশত বর সেসব গাড়িতে করে হাজির হন কাবুল বিমানবন্দরের কাছেই সিটি স্টার নামের ওই ওয়েডিং হলে। একজন নারীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
গণবিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে করতে আসেন রুহুল্লাহ রিয়াজি নামে ১৮ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি জানান, আলাদা করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার মতো সামর্থ নেই তার।
রিয়াজি বলেন, ‘আফগানিস্তানের ঐতিহ্য মেনে বিয়ে করতে ২ থেকে আড়াই লাখ আফগানির (তিন থেকে চার লাখ টাকা) দরকার হয়। তবে এই গণবিয়েতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার আফগানি খরচ হচ্ছে।’
আফগানিস্তানের ঘোর প্রদেশের হাজারা শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য রুহুল্লাহ রিয়াজি। দিনে তার আয় মাত্র ৩৫০ আফগানি। তিনি বলেন, ‘বর ও কনের দুজনের পরিবার থেকে আমরা ৩৫ জনকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছি। এককভাবে বিয়ে করতে হলে সংখ্যাটা হতো ৩০০ থেকে ৪০০ জন।’
এই গণবিয়ের আয়োজন করেছে সালেব ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রত্যেক নতুন দম্পতিকে অনুদান হিসেবে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি দেয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, সংসার জীবন শুরুর জন্য তাদের একটি কেক, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, লোশন, মাদুর ও কম্বলসহ ঘরের কাজে লাগে এমন নানা সরঞ্জাম দিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদন মতে, গণবিয়ের আয়োজনের অংশ হতে আবেদন করেছিল ৬০০ জুটি। তার মধ্যে ৫০ জোড়া বর-কনেকে বাছাই করা হয়। এই দিনটির জন্য তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে তালিবান ক্ষমতায় আসে। সেই থেকে তালিবান সরকার নাচ-গানকে দেশটিতে অনৈসলামিক বলে বিবেচনা করে, এবং কঠোরভাবে তা নিষিদ্ধ করে। এতে বিয়ের আয়োজন অনেকটাই কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে পড়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: