৬২ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছেন এক নওমুসলিম নারী। বুলগেরিয়ান বংশোদ্ভূত এই নারীর নাম লিলিয়ানা মুহাম্মদ। গত ২ ডিসেম্বর শনিবার, নাইজেরিয়ার কানো শহরের বানবাইর রহমান ইসলামিক স্কুলে অন্য শিক্ষার্থীর সঙ্গে তিনিও হিফজ সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিন দশক আগে ইবরাহিম সামবোর সঙ্গে লিলিয়ানা মুহাম্মদের বিবাহ হয়।
এরপর নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কানো শহরে এসে বসবাস শুরু করেন লিলিয়ানা। এক দশক আগে তাঁর স্বামী মারা যান। এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মুসলিম হওয়ার পর থেকেই কোরআনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। স্থানীয় মাদরাসার এক শিক্ষিকার কাছে কোরআন পড়া শুরু করেন এবং হিফজ সম্পন্ন করেন।
লিলিয়ানা বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণের পর কোরআনের সঙ্গে আমার অন্য রকম সম্পর্ক তৈরি হয়। বয়স বেশি হলেও আমি কোরআন হিফজ শুরু করি। শুরু থেকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে মালামা হাফসার কাছে কোরআন শিখেছি। তিনি আমাকে আরবি বর্ণের জ্ঞান থেকে শুরু করে কোরআন পাঠের পদ্ধতিসহ সব কিছু শুরু করেছেন। আমি তাঁর কাছে প্রতিটি আয়াত পড়ে পড়ে মুখস্থ করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলাম আমার অন্তরে শান্তি তৈরি করেছে। কোরআন আমাকে সব সময় পথ দেখিয়েছে। আমার জীবনকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে। যখন আমি পবিত্র কোরআন পড়ি তখন মনে হয় আমি নিজেকে পড়ছি। আমি নিজের মধ্যে অন্য রকম প্রশান্তি অনুভব করি। আপনি যখন পড়বেন তখন কোরআনও আপনাকে পড়বে। কোরআন পাঠ আমার জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত।’
কানো শহরের জীবনযাপন সম্পর্কে লিনিয়ানা বলেন, ‘এখানে মুসলিমরা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করে। তারা অনুকূল পরিবেশে নিজ ধর্ম পালন করছে। অন্য দেশের তুলনায় এখানে ধর্মীয় কার্যক্রম অনেক বেশি পালিত হয়। সময়ের দিক থেকে এখানে নামাজ ও রোজার সময়সূচি বিশ্বের অন্যান্য স্থানের তুলনায় কিছুটা ব্যতিক্রম। কারণ এখানে দিন ও রাত সমান সমান হয়।’
লিনিয়ানার ছোট মেয়ে হামিদা সাম্বো বলেন, ‘মানুষের জীবনে এমন আনন্দদায়ক মুহূর্ত খুবই কম এসে থাকে। মায়ের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দ অনুভূতি তৈরি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৩ বছর আগে আমার বাবা ইসলাম গ্রহণের আগেই মারা গেছেন। তিনি থাকলে আমাদের আনন্দ আরো বেশি হতো।’
সূত্র : বিবিসি হাউসা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: