ভারতে বৃদ্ধকে জোর করে বলানো হলো ‘জয় শ্রীরাম’, দাড়িতে আগুন

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের কোপ্পাল জেলার গঙ্গাবতি শহরে দুই মোটরসাইকেল-আরোহীর বিরুদ্ধে ৬৫ বছর বয়সী এক মুসলিম বৃদ্ধের দাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। একই সাথে অভিযুক্ত দুজন ভুক্তভোগীকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করে। ৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ওই বৃদ্ধ একটি এফআইআর দায়ের করেন।

হোসেন সাব নামে ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ গঙ্গাবতীতে তার মেয়ের সাথে একটি ছোট বাড়িতে থাকেন। দুর্বল দৃষ্টিশক্তির কারণে তিনি কপ্পাল এবং বিজয়নগরের মতো জায়গায় ভিক্ষা করেন।

২৫ নভেম্বর রাতে হোসেন সাব হোসাপেটে থেকে গঙ্গাবতিতে ফিরেছিলেন। তিনি অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ওই সময় অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই মোটরসাইকেলআরোহী তাকে মোটরসাইকেলে এগিয়ে দেয়ার প্রস্তান দেয়। মোটরসাইকেলে যাত্রা শুরু হলে তারা দুজন হোসেন সাবকে লাঞ্ছিত করতে শুরু করে এবং তাকে গালিগালাজ করে।

অভিযোগ অনুসারে, তারা তার দাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং তাকে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করে। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তার চিকিৎসা চলছে।

হোসেন সাব বলেন, ‘দু’জন পাম্পানগর এলাকার কাছে নিয়ে আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে এবং বাইক থেকে ধাক্কা দেয়। আমি অনুনয় করেছিলাম যে আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি না এবং বাড়ি ফিরে যেতে চাই। তারা আমাকে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করেছে এবং তা করার পরেও তারা আমাকে লাঞ্ছিত করা বন্ধ করেনি।’

তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা একটি কাঁচের বোতল ভেঙে ফেলে এবং কাঁচের ধারাল টুকরো দিয়ে আমার দাড়ি কেটে ফেলার চেষ্টা করে। তাতে ব্যর্থ হয়ে তাদের একজন আমার দাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমার চিৎকার শুনে কয়েকজন রাখাল টের পেয়ে যায়। এর আগ পর্যন্ত তারা আমাকে মারধর করতে থাকে বলে আমি ভেবেছিলাম আমাকে মেরে ফেলা হবে।’

এ ঘটনায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাসস্ট্যান্ডের কাছে এবং পাম্পানগর এলাকার প্রধান সড়কগুলো সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এদিকে, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া (এসডিপিআই) এ ঘটনার বিরুদ্ধে গঙ্গাবতিতে তহসিলদারের অফিসের সামনে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে।

এসডিপিআই-এর জেলা সভাপতি কপাল সেলিম বলেন, ‘আমাদের জেলায় সর্বস্তরের মানুষ সম্প্রীতিতে বাস করে। এটা নিতান্তই নৃশংসতা যে একজন নিরীহ বৃদ্ধকে মারধর করা হয়েছে এবং ধর্মীয় স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা নির্যাতিতার ওপর হামলা ও মানসিক নির্যাতনের জন্য দায়ী দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এছাড়া, এসডিপিআই হোসেন সাবের চিকিৎসার খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান জেলা সভাপতি কপাল সেলিম।


সূত্র : দি সিয়াসাত ডেইলি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: