ইউরোপের দেশে দেশে মুসলিম নারীদের মাথায় হিজাব বা স্কার্ফ পরার বিরোধিতা অনেক আগে থেকেই। বছরের পর বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্তি চলে আসছে। সেই বিভক্তির সমাধানে সদস্যরাষ্ট্রের সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষেই অবস্থান স্পষ্ট করলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ আদালত- সিজেইইউ। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ন্যায়বিচার আদালত ২৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার এক রায়ে বলেছে, ইইউর সদস্য যে কোনো দেশ ইচ্ছা করলে তার সরকারি কর্মচারীদের মাথায় হিজাব বা স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করতে পারবে। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা যেন প্রয়োজনীয়তার সীমা লঙ্ঘন না করে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালতে ইইউ সদস্যরাষ্ট্র বেলজিয়ামের একটি মামলা উত্থাপিত হয়। পূর্ব বেলজিয়ামের আনস মিউনিসিপ্যালিটির একজন নারী কর্মচারী কর্মক্ষেত্রে হিজাব বা হেডস্কার্ফ পরে আসায় তাকে বারণ করা হয়। তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার দাবি তুলে তা মানছিলেন না ওই মুসলিম নারী।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পরবর্তীকালে তাদের কর্মসংস্থানের নিয়মাবলী পরিবর্তন করে এবং নতুন নিয়মে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই ধর্মীয় বা আদর্শিক বিশ্বাসের চিহ্ন প্রকাশ পায় এমন পোশাক পরা যাবে না।
নতুন নিয়মে তার ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে আইনি চ্যালেঞ্জ শুরু করেন ওই নারী।
সিজেইইউ ওই মামলার রায়ে মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, সদস্য দেশগুলোর সরকারি কর্তৃপক্ষ নিজেদের কর্মীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের লক্ষণ যেমন মাথার স্কার্ফ বা হিজাব পরা নিষিদ্ধ করতে পারবে।
মুসলিম নারীদের মাথা ও কাঁধজুড়ে হেড স্কার্ফ বা হিজাব পরার বিষয়টি বছরের পর বছর ধরে ইউরোপ জুড়ে একটি বিভেদমূলক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিজেইইউ বলেছে, একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে নেওয়া কোনো কঠোর নিরপেক্ষতার নীতি বস্তুনিষ্ঠভাবেই ন্যায্য বলে বিবেচিত হতে পারে।
ইউরোপীয় আদালত আরও বলেছে, আবার কোনো জনপ্রশাসন যদি সাধারণভাবে কিংবা নির্বিচারে কাউকে ধর্মীয় বিশ্বাসের চিহ্নযুক্ত পোশাক পরিধানের অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই ন্যায্য।
আদালত বলেছে, তবে যাইহোক, বিষয়টি অবশ্যই ধারাবাহিক ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অনুসরণ হওয়া উচিত এবং যেই ব্যবস্থাই নেওয়া হোক সেটি যতটা প্রয়োজন, সেই মাত্রা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।
সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: