গাজা সফরে ইলন মাস্ককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে হামাস

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:০৯

ইলন মাস্ক এবং হামাসের বৈরুতপ্রবাসী নেতা ওসামা হামাদান : সংগৃহীত ছবি ইলন মাস্ক এবং হামাসের বৈরুতপ্রবাসী নেতা ওসামা হামাদান : সংগৃহীত ছবি

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ককে গাজা উপত্যকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসের বৈরুতপ্রবাসী নেতা ওসামা হামাদান তাকে এই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২৭ নভেম্বর, সোমবার ইসরায়েল সফরে গিয়েছিলেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান টেসলা, মহাকাশযাত্রা ও গবেষণা উপকরণ প্রস্তুতকারী কোম্পানি স্পেস এক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক। ইসরায়েলের প্রধান শহর তেল আবিব পাশাপাশি গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তও পরিদর্শন করেছেন তিনি। গত ৭ অক্টোবর এই সীমান্তেই হামলা চালিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।

ইসরায়েল সফরে গিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে মাস্ক বলেছেন, ফিলিস্তিনের সব অঞ্চলকে মৌলবাদী শক্তির প্রভাবমুক্ত করা জরুরি।

মাস্কের ইসরায়েল সফরের পরের দিন ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসের জেষ্ঠ নেতা ওসামা হামদান বলেন, ‘আমরা তাকে গাজায় সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তিনি যদি আমাদের আমন্ত্রণ রক্ষা করে গাজা সফরে আসেন, তাহলে স্বচক্ষেই দেখতে পাবেন এই উপত্যকার বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে কী নির্মম, ভয়াবহ ধংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।’

সোমবার ইসরায়েল সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইলন মাস্ক। সেই সাক্ষাতে মাস্ক বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো এবং হত্যার উসকানি দেয় এমন সব প্রোপাগান্ডা বন্ধে তার পক্ষে যা যা করা সম্ভব— সবই করবেন তিনি।

পরে ইরেজ সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের পর গাজা উপত্যকার পুনঃনির্মাণে আমি সহযোগিতা করতে চাই, তবে তার আগে অবশ্যই এই উপত্যকাকে মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রভামুক্ত হতে হবে।

সফর শেষ করে সোমবারই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান তিনি। পরের দিন বৈরুতের সংবাদ সম্মেলনে তাকে গাজা সফরের আমন্ত্রণ জানান ওসামা হামদান।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনী।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

অন্যদিকে, হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

টানা সাত সপ্তাহ যুদ্ধ চলার পর গত ২৫ নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে গাজা উপত্যকায়। যুদ্ধবিরতির গত ৫ দিনে মোট ৮১ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্ত এই জিম্মিদের ৬০ জন ইসরায়েলি এবং ২১ জন বিদেশি নাগরিক। বিদেশিদের অধিকাংশই থাইল্যান্ডের।

বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ একদিন করে বাড়াতে রাজি আছে ইসরায়েল। 

সূত্র : রয়টার্স

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: