সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশা, পশ্চিমা কঠোর নিষেধাজ্ঞা এবং কট্টর ধর্মীয় শাসনের মধ্যেই চমক দেখাল আফগানিস্তান। দেশটির মুদ্রা আফগানি উঠে এসেছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রার তালিকায়। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এই অর্জন করেছে দেশটি। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সহযোগিতার কারণে এমনটা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া দুই বছর আগে ক্ষমতা গ্রহণ করা ধর্মীয় গোষ্ঠীর কঠোর মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের ফলেও আফগানির মান বেড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, নগদ অর্থের প্রবাহ ও রেমিট্যান্সের কারণে আফগানির মান ৯ শতাংশ বেড়েছে।
২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই স্থানীয় বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে পাকিস্তানি রুপি ও ডলারের লেনদেন নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয় কাবুল প্রশাসন। এ ছাড়া দেশের বাইরে ডলার নিয়ে যাওয়া এবং বৈদেশিক অনলাইন বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় তারা। কাবুল সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে ক্রমেই বাড়তে থাকে আফগানির মান। এতে অবদান রেখেছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাবুলের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের পরিস্থিতিও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউএস ডলারের বিপরীতে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ আফগানির মান ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। মুদ্রা মানের তালিকায় বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফগানি। আফগানিস্তানের মুদ্রার আগে মাত্র আর দুটি মুদ্রা রয়েছে—একটি কলোম্বিয়ান পেসো এবং অন্যটি শ্রীলঙ্কান রুপি।
আফগানিস্তানে দিন দিন মুদ্রার মান শক্তিশালী হলেও অন্যসব সামাজিক সমস্যা প্রকটভাবে রয়ে গেছে। দেশটির বেকারত্বের হার এখনো ঊর্ধ্বমুখী। ওয়াশিংটনের নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কামরান বোখারি বলেন, ‘মুদ্রার কঠোর নিয়ন্ত্রণ কাজে দিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এটি বেশি দিন টিকবে না। এ কারণে পরে আরও সংকটে পড়তে হবে দেশটিকে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: