মুসলিমবিশ্বের কয়েকটি ইস্যু নিয়ে সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে শরণার্থী বিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি ইস্তাম্বুলে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গত ৮ আগস্ট, মঙ্গলবার আঙ্কারায় এরদোয়ানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অংশ নেয় কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের (আইইউএমএস) প্রতিনিধিদল। তারা তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া সিরিয়ান শরণার্থীদের নানা সমস্যা এবং বিভিন্ন দেশে ইসলামের পবিত্র বিষয়গুলোর অবমাননারোধে করণীয় সংক্রান্ত আলোচনা করেন।
সম্প্রতি তুরস্কে সিরিয়া থেকে আশ্রয় নেওয়া অনিবন্ধিত অভিবাসীরা পুলিশ ও স্থানীয়দের কঠোর আচরণ ও দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন। তা ছাড়া তুর্কির সম্প্রদায়ের অনেকের মধ্যে তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া আরবদের প্রতি বর্ণবাদি মনোভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বৈঠকে আইইউএমএস-এর প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন সংস্থাটির মহাসচিব শায়খ ড. আলি কারাহ দাগি, শায়খ ওমর আবদুল কাফি, শায়খ মুহাম্মদ আল-সগির, শায়খ মুহাম্মদ রাতিব আল-নাবালসি, শায়খ উসামা আল-রিফায়ি, শায়খ আলি আল-সাল্লাবি ও শায়খ আবদুল মজিদ জানদানি প্রমুখ। অপর দিকে তুরস্কের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দেশটির ধর্মবিষয়ক প্রধান ড. আলি ইরবাশ ও দেশটির ধর্মবিষয়ক সাবেক প্রধান মুহাম্মদ গুরমাজ।
শায়খ মুহাম্মদ আল-সগির জানিয়েছেন, প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে ২০টির বেশি দেশ থেকে বরেণ্য আলেমরা ছিলেন। তারা সিরিয়ান শরণার্থী সমস্যাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ইতিমধ্যে এরদোয়া তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শরণার্থী বিষয়ক সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এরদোয়া বলেছেন, তুরস্কে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের সবার জন্য তার দেশের অন্তর উন্মুক্ত রয়েছে। এছাড়া তিনি আলেমদের তার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে বলেছেন।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুখতার আল-শানকিতি জানিয়েছে, শরণার্থী বিষয়ে এরদোয়ান তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি তাদের সঙ্গে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধেরে মূলনীতি অনুসরণ করবেন। তিনি আলেমদের তার উপদেষ্টার মাধ্যমে সব যোগাযোগ রাখতে বলেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলেমদের এ বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক বৈঠক’ অভিহিত করেন তুরস্কের ধর্মবিষয়ক সাবেক প্রধান মুহাম্মদ গুরমাজ বলেছেন, ‘প্রথম দিকে তুরস্কের আলেমরা এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানাতে বৈঠকটির আয়োজন করতে চেয়েছিলেন।
পরবর্তীতে সময়ের প্রেক্ষাপটে তা ঐতিহাসিক বৈঠকে রূপ ধারণ করে। কারণ আলেমরা তাঁর সঙ্গে মুসলিমবিশ্বের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট আলেমদের প্রত্যেকজনের কথা মনোযোগসহ শুনেছেন।’
সূত্র : আল-জাজিরা মুবাশির
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: