ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানে শুরু হলো ইমাম আবু হানিফা ২য় আন্তর্জাতিক শিল্প ও কৃষি প্রদর্শনী। ১৬ জুলাই, রবিবার রাজধানী কাবুলে এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়।
এতে বক্তৃতাকালে দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী মাওলানা আব্দুল গণী বারাদার আখুন্দ বলেন, ইমারাত প্রতিষ্ঠার পর এটি এযাবতকালের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। এবারের প্রদর্শনীতে ভিন্ন ভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের ৬শতাধিক শিল্প ও কৃষি পণ্য প্রদর্শনের জন্য আনা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের শিল্প ও কৃষি পণ্য জনসাধারণ ও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে এধরণের আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের সরকার আফগান শিল্প ও কৃষির সাথে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দিতে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি লাভের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে ও বিদেশে নিয়মিত এধরণের প্রদর্শনীর আয়োজন করে যাচ্ছে।
এসময় তিনি তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশের বড় বড় বাণিজ্য সংস্থা ও শিল্পপতিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উচ্ছাস প্রকাশ করেন। আর চীনের সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা এতে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করাই সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনকে আমাদের সরকার সাধুবাদ জানিয়েছে। আমরা সকলকে আমাদের প্রদর্শনীতে সুযোগ দিতে চাই। পুনরায় ইসলামী ইমারাত প্রতিষ্ঠার ফলে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। অলস পরে থাকা খনিজ সম্পদ আহরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আফগানিস্তান এখন একটি আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আফগান পুনর্গঠন এখন নতুন মাত্রা লাভ করেছে।
মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই যে, আফগানিস্তান এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ। আপনারা সকলেই নির্দ্বিধায় ট্রানজিট রুট হিসেবে আফগানিস্তান হয়ে চলাচল করতে পারেন। দেশ পুনর্গঠন ও নিরাপদ ট্রানজিট রুট পুনরায় সচলের অংশ হিসেবে আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি হাইওয়েগুলোর সংস্কার কাজও শুরু করেছি। এমনকি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাবুল-কান্দাহার ও সালাং হাইওয়ে উন্মুক্ত করে দিয়েছে আমাদের সরকার।
আফগান বিনিয়োগকারীদের ন্যায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে একই সুযোগ সুবিধা পাবেন বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
দেশীয় বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও উদ্যোক্তাদের প্রতি লক্ষ্য করে মাওলানা আখুন্দ বলেন, আপনাদেরকে বুদ্ধিমত্তার সাথে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দেশজ বাণিজ্যের পরিসর আরো বাড়াতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে উরুজগান ও জাবুল প্রদেশে সম্প্রতি চেম্বার অফ কমার্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এছাড়া আফগানিস্তান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট বা এসিসিআইকে বাঘলান প্রদেশে দ্রুততম সময়ে আরেকটি চেম্বার প্রতিষ্ঠা করার এবং প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে তাকে কার্যকরী করে তুলার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য; আফগান পণ্যের প্রচার, জাতীয় বিনিয়োগকারীদের সমর্থন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা, নাগরিকদেরকে ব্যবসায় উদ্বুদ্ধকরণ ও উৎপাদনে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রদর্শনীটি আয়োজিত হচ্ছে।
আফগানিস্তান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট বা এসিসিআই তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের সহায়তায় ইমাম আবু হানিফা ২য় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীটির আয়োজন করছে। প্রদর্শনীটি ২২ জুলাই পর্যন্ত চলমান থাকবে।
এতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর যারা যার কৃষি শিল্প সংশ্লিষ্ট দেশীয় যন্ত্রপাতি, কৃষি পণ্য, নির্মাণ ও হস্তশিল্প, চিকিৎসা যন্ত্র, ওষুধ এবং এজাতীয় আরো অন্যান্য মোট ৬০০ ধরণের পণ্য প্রদর্শিত হবে।
সূত্র: আল ইমারাহ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: