কুরআন অবমাননার ঘটনায় জাতিসংঘে প্রস্তাব, পক্ষে-বিপক্ষে কারা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


বিশ্বের মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র হলো আল-কুরআন। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে কুরআন অবমাননাকে মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার সর্বশেষ নজির সুইডেনে মসজিদের বাইরে পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে দেওয়া। এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের হৃদয়।

প্রতিক্রিয়া দেশে দেশে ধর্মগ্রন্থটি হাতে রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ করেন সব বয়সী মুসলিমরা। কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদও জানানো হচ্ছে। কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশেষ বৈঠক ডাকে জাতিসংঘ।

১২ জুলাই, বুধবার ‘বৈষম্য, শত্রুতা ও সহিংসতা উদ্রেককারী ধর্মীয় ঘৃণার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ’ নামে প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবের সপক্ষে ছিল বাংলাদেশসহ আরও ২৮ দেশ। আর বিপক্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ১২ দেশ। এ ছাড়া ভোটদানে বিরত ছিল সংখ্যা ৭টি।ৎ

মানবাধিকার পরিষদের বিশেষ বৈঠকে ওআইসি কুরআন পোড়ানোর ঘটনাটিকে ‘ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানানোর প্রস্তাব উত্থাপন করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়।

আল-জাজিরা জানায়, প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, এটি আসলে মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তাদের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর প্রতিক্রিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার বন্ধ করুন।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন ইউএনএইচআরসির প্রধান ভলকার টার্ক বলেছেন, ‘মুসলিমবিদ্বেষ, ইসলামবিদ্বেষ, ইহুদিবিদ্বেষ কিংবা খ্রিস্টানদের নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন আহমাদি, ইয়াজেদি, বাহাইদের বিরুদ্ধেও বিদ্বেষপূর্ণ আচরণও অন্যায়। এ সবকিছুই অন্যায় এবং তা বন্ধ করা প্রয়োজন।’

তার মতে, পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনা সার্বিকভাবে বিদ্বেষ তৈরি করেছে, সহিংসতার জন্ম দিয়েছে এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।

প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে : আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ভারত, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালাবি, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনাম।

প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে : বেলজিয়াম, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনিগ্রো, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র।

ভোটদানে বিরত ছিল :বেনিন, চিলি, জর্জিয়া, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, নেপাল ও প্যারাগুয়ে।

 

সূত্র : আল-জাজিরা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: